আমদাবাদ: আমদাবাদ থেকে গন্তব্য ছিল লন্ডন। দীর্ঘ যাত্রাপথে মাত্র ২৭ সেকেন্ডেই সব শেষ। আমদাবাদের বুকে ততক্ষণে ঘটে গেছে, ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বিমান বিপর্যয়। সামনে এসেছে বীভৎস বিস্ফোরণের ছবি। মৃত্যু হয়েছে বিমানযাত্রী এবং বিমানের কর্মী মিলিয়ে ২৪১ জনের। কিন্তু, আশ্চর্যজনকভাবে এই বিপর্যয় থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন মাত্র একজন। তা-ও নিজের পায়ে হেঁটে। আক্ষরিক অর্থেই একেবারে মিরাকল! বর্তমানে আমদাবাদের সিভিল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। মৃত্যুকে দেখেছিলেন কাছ থেকে। সেই অভিজ্ঞতাই ভাগ করে নিলেন সংবাদমাধ্যমে। কী কী ঘটেছিল টেক অফের পরের ওই ২৭ সেকেন্ডে?
হাসপাতালে শুয়ে বিমান বিপর্যয়ে একমাত্র বেঁচে ফেরা যাত্রী বিশ্বাস কুমার রমেশ বলেন, 'টেক অফের পরই ৫ থেকে ৭ সেকেন্ডের জন্য মনে হয়েছিল বিমানটি আটকে গিয়েছে কোথাও। এরপর ফ্লাইটের মধ্যে সবুজ আর সাদা আলো জ্বলে উঠেছিল। এরপর মনে হল প্লেনটি বেশ কিছুটা জোরে ওড়ার চেষ্টা করছে। গাড়ি যেমন আটকে গেলে রেস দিয়ে থাকি, কিছুটা সেরকম। এরপরই বিরাট বিস্ফোরণ। আমি বিমানের যেদিকে বসেছিলাম সেইদিকটা ওই হস্টেলের নিচের তলায় ক্র্যাশ হয়েছিল। মানে জমির উপরে পড়েছিলাম। আর আমার দিকের দরজা ভেঙে বেশ কিছুটা স্পেস ছিল। সে দিকটাই দিয়েই বেরতে সক্ষম হই আমি। তবে আমি যদি উল্টো দিকে থাকতাম তাহলে বেরতে পারতাম না। কারণ ওই দিকটা হস্টেলের ছাদের দিকে ভেঙেছিল। আগুনে আমার বাঁ হাত জ্বলে গিয়েছে।' নিশ্চিত মৃত্যুমুখ থেকে জীবন ফিরে পেয়েছেন তিনি। গোটা ঘটনাটি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছেন না বিশ্বাস কুমার। ধরা গলাতেই বলেন, 'আমার চোখের সামনেই সবটা হয়েছে। জানি না কীভাবে বেঁচে ফিরলাম, এখন নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না। কিছু সময়ের জন্য বুঝতেই পারিনি কী ঘটছিল চারপাশে। এক সময় তো আমার এও মনে হচ্ছিল যে আমিও মরে যাব। কিন্তু চোখ খুলে দেখি বেঁচে আছি আমি। আমার নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছে না কীভাবে বেঁচে ফিরলাম। সেই সময় সিটবেল্ট খুলে চেষ্টা করি বেরিয়ে আসার। আশেপাশে তখন কেউ আর বেঁচে নেই।'
এদিন বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সিভিল হাসপাতালে গিয়ে কথা বলেন বিশ্বাস কুমার রমেশের সঙ্গেও। সে প্রসঙ্গে বিশ্বাস কুমার বলেন, 'মোদি এসে জিজ্ঞেস করেছেন, 'কীভাবে এটা হল? আমি সবটা জানিয়েছি। আমার শরীর এখন কেমন আছে ও জিজ্ঞেস করেন প্রধানমন্ত্রী।'