মুম্বই: দেবেন্দ্র ফড়ণবীসকে আবারও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী করার নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে দ্বিতীয় বার মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করেছেন নিজে। আর তার পরই আয়কর দফতরের হাতে বাজেয়াপ্ত হওয়া সব সম্পত্তি ফেরত পেলেন অজিত পওয়ার। ২০২১ সালে অজিতের প্রায় ১০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে আয়কর দফতর। সেই সব সম্পত্তি ফেরত পেয়ে গেলেন অজিত। (Ajit Pawar)


অজিত পওয়ার এবং তাঁর পরিবারের বেনামি সম্পত্তির বিষয়টি নিয়ে মামলা ঝুলছিল। সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে Prevention of Benami Property Transactions Appellate Tribunal. দেবেন্দ্রর সঙ্গে বৃহস্পতিবারই শপথ নেন অজিত। আর তার পর দিনই, শুক্রবার তাঁর ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে থাকা বেনামি সম্পত্তির মামলা খারিজ হয়ে গেল। (Maharashtra Politics)


২০২১ সালের ৭ অক্টোবর অজিত এবং তাঁর পরিবারের একাধিক সম্পত্তিতে হানা দেয় আয়কর দফতর। বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির তালিকায় ছিল সাতারার চিনিকল, দিল্লির ফ্ল্যাট এবং গোয়ার রিসর্টও। সেই সময় শরদ পওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেসেই শামিল ছিলেন অজিত। কংগ্রেস-শিবসেনা-NCP শিবিরের 'মহা বিকাশ আঘাডি' জোটের অংশ ছিলেন। 


এর পর আরব সাগর দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। ২০২২ সালেই 'মহা আঘাডি জোটে'র বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিজেপি-র হাত ধরেন অজিত। নিজের পৃথক দল NCP (অজিত) গড়ে তোলেন। তাঁর সঙ্গে সেই বিদ্রোহে শামিল হয়ে উদ্ধব ঠাকরের হাত ছেড়ে সরে আসেন একনাথ শিন্ডেও। তৈরি করেন শিবসেনা (শিন্ডে)। এবারের বিধানভা নির্বাচনেও একসঙ্গেই লড়াই করেন তাঁরা। কিন্তু প্রথম বার একনাথ মুখ্যমন্ত্রী হলে, এবার তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাননি অজিত। সরাসরি জানিয়ে দেন, তাঁর সমর্থন বিজেপি-র প্রার্থীর দিকেই। ফলে শিন্ডের আশায় জল ঢেলে দেন অজিত। এর পরই বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পত্তি ফিরে পেলেন অজিত। 


আয়কর দফতরের দাবি ছিল, বেআইনি লেনদেনে ওই সম্পত্তিগুলিই মাধ্যম ছিল। জানা গিয়েছে, তদন্তে নেমে অজিতের নামে কোনও সম্পত্তি পাওয়া যায়নি। বেনামি সম্পত্তির সঙ্গে পওয়ার পরিবারের কোনও সংযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানা গিয়েছে। তাই প্রমাণের অভাবে মামলা খারিজ করে দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। অজিতের আইনজীবী প্রশান্ত পাটিত জানান, অজিত এবং তাঁর পরিবার কোনও অন্যায় করেছেন বলে আইনি প্রমাণ দেখাতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা। এর আগে, চলতি বছরের জুন মাসে ২৫ হাজার কোটি টাকার সমবায় দুর্নীতির মামলাও ক্লোজ করে দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।


বিজেপি-র হাত ধরার পর থেকেই দুর্নীতি মামলায় যেভাবে একের পর এক ক্লিনচিট পেয়ে যাচ্ছেন অজিত, সেই নিয়ে কটাক্ষ করেছেন শিবসেনা (উদ্ধব) নেতা সঞ্জয় রাউত। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এতদিন ৭০ হাজার কোটির দুর্নীতি বলে অভিযোগ করছিলেন মোদি। এখন বিজেপি-র ওয়াশিং মেশিনে ধুয়েমুছে সাফ গেল? কংগ্রেস নেত্রী বিনীতা জৈনের কথায়, 'ভ্রষ্টাচারী মালামাল,এই হল মোদির অমৃতকাল। এই জন্যই স্লোগান দিয়েছিলেন, 'এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়'।'