অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার : পরিকল্পনামাফিক খুন। দুই ভাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালতের ফাস্ট ট্র‍্যাক কোর্ট।


জানা গেছে, ২০১১ সালের ডিসেম্বর নাগাদ এই ঘটনা ঘটে আলিপুরদুয়ার শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মান্না দে স্ট্রিটে। আলিপুরদুয়ার থানা মোড়ের বাসিন্দা দুই ভাই- হকি দাস এবং রকি দাস ।


অভিযোগ, বাইকে চেপে মান্না দে স্ট্রিটের সুজিত সেনগুপ্তর বাড়িতে হানা দেয় হকি দাস এবং রকি দাস। সেখানে তারা সুজিতকে বাইরে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর তাকে ধারালো তরোয়াল দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। তরোয়ালের আঘাত থেকে নিজেকে হাত দিয়ে বাঁচাতে গেলে সুজিতের হাত টুকরো হয়ে পাশের নর্দমায় গিয়ে পড়ে। যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন সুজিত। তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন পরিবার সহ বাড়ির ভাড়াটে। ঘটনার জেরে শোরগোল পড়ে যায়।


ওই সময় বাইকে চেপে হকিকে নিয়ে পালিয়ে যায় রকি। খবর পেয়ে ছুটে আসে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে গুরুতর জখম অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় সুজিতকে। সেখানে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে শতাধিক সেলাই পড়ে। যদিও তাঁর হাত খোয়াতেই হয়।


এই ঘটনায় পরের দিনই এফ আই আর দায়ের হয় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এর পর আলিপুরদুয়ার আদালতে শুরু হয় মামলা। এরই মাঝে মারা যান আক্রান্ত সুজিত সেনগুপ্ত। পুলিশ হায়দরাবাদ থেকে হকিকে এবং উত্তরাখণ্ডের মুসৌরি থেকে গ্রেফতার করে রকিকে। 


ঘটনার ১০ বছরের বেশি সময় ধরে দুই প্রত্যক্ষদর্শী সহ ১৪ জনের বয়ানের ভিত্তিতে শুক্রবার আদালত অভিযুক্তদের দোষী স্বাব্যস্ত করে। এর পর আজ দুপুরে আদালত অভিযুক্ত দু'জনকে আইপিসি ৩৪১, ৩২৬ এবং ৩০৭ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। সাজা শোনানো হয় অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালতের ফাস্ট ট্র‍্যাক কোর্টের সুপর্ণা ভট্টাচার্যের এজলাসে। 


আদালতের এই রায়ে আক্রান্তের পরিবার স্বস্তি পেলেও, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবে বলে জানিয়েছে দোষীদের পরিবার।