এলাহাবাদ: বার্ধক্যে পৌঁছেও বিবাহবিচ্ছেদের মামলা। খোরপোষের দাবি ঘিরে চলছে দড়ি টানাটানি। নিম্ন আদালতের পর হাইকোর্টে পৌঁছে গিয়েছে মামলা। কিছুতেই নিরস্ত করা যাচ্ছে না প্রবীণ দম্পতিকে। সেই নিয়ে এবার হতাশার সুর আদালতের গলাতেও। 'নির্ঘাত কলিযুগ শুরু হয়ে গিয়েছে' বলে মন্তব্য করল আদালত। (Allahabad High Court)


উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদ হাইকোর্টে এক প্রবীণ দম্পতির খোরপোষের মামলা পৌঁছেছে। স্বামী মুনেশকুমার গুপ্তা আলিগড়ের বাসিন্দা। তাঁর বয়স ৮০ বছর। অন্য দিকে, স্ত্রী গায়ত্রী দেবীর বয়স নয় নয় করে ৭৫ বছর। ২০১৮ সাল থেকে সম্পত্তি নিয়ে দু'জনের মধ্যে আইনি লড়াই চলছে। এবছর ১৬ ফেব্রুয়ারি সেই মামলায় নিম্ন আদালত স্ত্রীর খোরপোষের দাবিতে সিলমোহর দেয়। (Elderly Couple Alimony Battle)


নিম্ন আদালতের নির্দেশ ছিল, মুনেশকে প্রতি মাসে স্ত্রীকে খোরপোষবাবদ ৫০০০ টাকা করে দিতে হবে। কিন্তু নিম্ন আদালতের ওই রায় পছন্দ হয়নি মুনেশের। স্ত্রীকে খোরপোষ দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত, তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি করছিলেন বিচারপতি সৌরভ শ্যাম শামসেরি। প্রবীণ দম্পতিকে বোঝানোর চেষ্টাও করেন তিনি। কিছুতেই  সুরাহা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত 'কলিযুগ' টিপ্পনি করেন।


স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের অবসরপ্রাপ্ত সুপারভাইজার মুনেশ। বিষয়-আশয় নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝাগড়া লেগেই থাকত তাঁর। সেই অশান্তি পরবর্তীতে বড় আকার নেয় এবং থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার অশান্তি ভেবে প্রথমে পরিবার পরামর্শ কেন্দ্রে বিষয়টি পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানেও সমঝোতা হয়নি দু'জনের মধ্যে। এর পর থেকেই আলাদা থাকতে শুরু করেন মুনেশ এবং গায়ত্রী।


এর পর ২০১৮ সালে ফ্যামিলি কোর্টে মামলা দায়ের করেন গায়ত্রী।  প্রতি মাসে স্বামীর কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে খোরপোষ দাবি করেন তিনি। তাঁর দাবি ছিল, স্বামী মাসে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা পান পেনশন বাবদ। সেখান থেকে ১৫ হাজার টাকা অন্তত প্রাপ্য তাঁর।  দীর্ঘ দিন সেই নিয়ে টানাপোড়েনের পর আদালত মুনেশকে খোরপোষ বাবদ ৫০০০ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যান মুনেশ। আর সেই মামলার শুনানিতেই মঙ্গলবার ওই দম্পতির উদ্দেশে টিপ্পনি করে আদালত। পরবর্তী শুনানির আগে তাঁদের সিদ্ধান্তে উপনীত হতে অনুরোধ করা হয়েছে।