নয়াদিল্লি: বিতর্কের জেরে আটকে গিয়েছে ছবির মুক্তি। কিন্তু পিছু হটছেন না অভিনেত্রী তথা বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউত। কৃষকদের নিয়ে মন্তব্য করে ফের বিতর্ক বাড়ালেন তিনি। কেন্দ্রের তরফে প্রত্যাহার করে নেওয়া বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন কঙ্গনা, যা নিয়ে চরমে রাজনৈতিক তরজা। এই মন্তব্যের জেরে ইতিমধ্যেই কঙ্গনার সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে বিজেপি। বিরোধীরা তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছেন। (Kangana Ranaut) 


'ইমার্জেন্সি' ছবির প্রচারে কৃষক আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করে আগেই বিতর্ক বাধিয়েছেন কঙ্গনা। কৃষকদের ওই আন্দোলন বাংলাদেশের মতো পরিস্থিতি ডেকে আনছিল, আন্দোলনস্থলে মৃতদেহ ঝুলছিল, ধর্ষণের ঘটনা ঘটছিল বলে দাবি করেন তিনি। সেই নিয়ে দলের তরফে ভর্ৎসনাও করা হয় তাঁকে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা কঙ্গনাকে ডেকে পাঠান যেমন, তেমনই বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, কঙ্গনার মন্তব্যকে সমর্থন করে না দল। দলের অবস্থান তুলে ধরেননি কঙ্গনা। (Kangana Farm Laws Remarks)


সেই রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র মান্ডিতে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন কঙ্গনা। কৃষক আন্দোলনের জেরে যে বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার, সেগুলিকে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি। কঙ্গনার মতে, কৃষি আইনগুলি ফিরিয়ে আনা উচিত। সেই দাবিতে সরব হওয়া উচিত কৃষকদেরই। 



পরিষ্কার ভাষায় কঙ্গনা বলেন, "আমি জানি এটা নিয়ে বিতর্ক হবে। কিন্তু আমার মনে হয়, যে কৃষি আইনগুলি প্রত্যাহার করা হয়েছিল, সেগুলি ফিরিয়ে আনা উচিত। এ নিয়ে সরব হওয়া উচিত কৃষকদের নিজেদেরই। দেশের উন্নয়নের স্তম্ভ কৃষক সমাজ। আমি ওঁদের অনুরোধ করব, নিজেদের ভালর জন্যই কৃষি আইনগুলি ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।"


কঙ্গনার এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হতে সময় লাগেনি। কংগ্রেসের তরফে কঙ্গনার মন্তব্যের ভিডিও পোস্ট করে তুলোধনা করা হয় বিজেপি-কে। দলের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনেত বলেন, "৭০০-র বেশি কৃষক শহিদ হন, তার পরই ঘুম ভাঙে মোদি সরকারের। কালো আইন তিনটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এখন বিজেপি সাংসদরা ওই আইন আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কংগ্রেস কৃষকদের পাশে আছে। নরেন্দ্র মোদি এবং ওঁর সাংসদরা যত চেষ্টাই করুন, ওই তিনটি কালো আইন কখনও ফিরবে না।" 


হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে এই মুহূর্তে চরম তৎপরতা বিজেপি-র অন্দরে। এই হরিয়ানা থেকেই ২০২০ সালে দিল্লি অভিমুখে কৃষকদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ওই তিন আইনের বিরুদ্ধে। সেই আন্দোলনের জেরেই শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় কেন্দ্র। হরিয়ানায় নির্বাচনের আগে কঙ্গনার এই মন্তব্যে তাই অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। যে কারণে দলের মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, প্রত্যাহার করে নেওয়া কৃষি আইন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি সাংসদ কঙ্গনার যে মন্তব্য বাইরাল হয়েছে, পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিতে চাই, বিজেপি-র তরফে এমন মন্তব্য করার এক্তিয়ার নেই কঙ্গনার। কৃষি আইন নিয়ে কঙ্গনার এই মন্তব্যের সঙ্গে বিজেপি-র অবস্থান সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।"