নয়াদিল্লি: রাহুল গাঁধীর নাগরিকত্ব নিয়ে মামলা। মামলাকারী বিজেপি কর্মীকে অন্তর্বর্তীকালীন নিরাপত্তা দিতে বলল আদালত। সেই মর্মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে নির্দেশ দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট সরাসরি। রাহুলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করায় হুমকি আসছে বলে দাবি করেন মামলাকারী। এতেই ওই বিজেপি কর্মীর জন্য ব্যক্তিগত ২৪ ঘণ্টার নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের বির্দেশ দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। (Rahul Gandhi Citizenship)
বিচারপতি সঙ্গীতা চন্দ্র এবং ব্রিজ রাজ সিংহের বেঞ্চে শুনানি হয়। সেখানেই এস ভিগ্নেশ শিশির নামের ওই বিজেপি নেতাকে অন্তর্বর্তীকালীন ওয়াই প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দিতে বলা হয় কেন্দ্রকে। CAPF থেকে একজন আধিকারিককে ভিগ্নেশের নিরাপত্তায় মোতায়েন করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। ভিগ্নেশ বিজেপি-র কর্নাটক ইউনিটের সদস্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে 'স্বয়মসেবক' বলে উল্লেখ করেছেন, যা RSS সদস্যরা ব্যবহার করেন। ওয়াই প্লাস নিরাপত্তার অর্থ একজন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা আধিকারিক পাবেন ভিগ্নেশ, পাশাপাশি ১০ সশস্ত্র কম্যান্ডো তাঁকে নিরাপত্তা দেবেন। (Allahabad High Court)
আদালতের তরফে রাহুলকে ‘অত্যন্ত প্রভাবশালী’ বলেও উল্লেখ করা হয়। আদালত বলে, “আবেদনকারী অত্যন্ত প্রভাবশালী একজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। লাগাতার হুমকি পাচ্ছেন উনি।” ভিগ্নেশ আদালতে জানান, রাহুলের বিরুদ্ধে CBI-এর কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছেন তিনি। বেশ কিছু নথিপত্রও জমা দিয়েছেন, যা থেকে স্পষ্ট ‘রাহুল গাঁধী আসলে ব্রিটেনের নাগরিক’। তাঁর দাবি, ২০০৩ সালে M/S Backops Limited নামে একটি সংস্থার প্রতিষ্ঠা হয় ব্রিটেনে, যার নথিতে রাহুল নিজেকে ব্রিটেনের নাগরিক বলে উল্লেখ করেছিলেন।
শুধু তাই নয়, ভিগ্নেশ জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে রায়বরেলী থানায় রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার আওতায় পাসপোর্টের অপব্যবহার, ভুয়ো আবেদনপত্র, জাল নথি, সঠিক সময়ে পাসপোর্ট জমা করতে না পারার দায়ে রাহুলের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই নিয়ে অগাস্ট মাসে তাঁকে নোটিস পাঠিয়েছে রায়বরেলীর পুলিশ। থানায় হাজির হতে বলা হয়েছে।
কেরলের ওয়েনাডে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার প্রার্থী হওয়া নিয়েও আপত্তি তোলেন ভিগ্নেশ। সেই নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করতেও উদ্যত হন তিনি। কিন্তু তাঁর অভিযোগ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন ভিগ্নেশ। তাঁর আইনজীবীর দাবি, ভিগ্নেশ কংগ্রেসের দুই নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে হুমকি পেতে হচ্ছে তাঁকে। এ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের আবেদনও জানান তিনি।
আদালতে কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে সওয়াল করেন ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল এস বি পান্ডে। তিনি জানান, ভিগ্নেশ যাতে নির্ভয়ে মামলা চালিয়ে যেতে পারেন, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। আগামী ৯ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। অবিলম্বে ভিগ্নেশকে নিরাপত্তা দিতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।