অ্যামনেস্টির অভিযোগ, গত দুই বছর ধরে সংস্থার ওপর দমন চালানো হচ্ছে এবং সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া কোনও আকস্মিক ঘটনা নয়।
অ্যামনেস্টির অভিযোগ, সরকারে স্বচ্ছতা এবং সম্প্রতি দিল্লির হিংসার ঘটনা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দিল্লির পুলিশ ও ভারত সরকারের দায়বদ্ধতা নিয়ে সরব হয়েছিল তারা। জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রেও মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। এরই ফলশ্রুতিতে তাদের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সহ কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির হয়রানির মুখে পড়তে হয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় এ ধরনের হয়রানি ভিন্নমত প্রকাশেরই কন্ঠরোধের সামিল বলে অভিযোগ করেছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অবিনাশ কুমার।
সরকারের অভিযোগ ছিল, অ্যামনেস্টি বেআইনিভাবে বিদেশি অর্থ পাচ্ছে। ২০১৮-তে ইডি বেঙ্গালুরুতে অ্যামনেস্টির সদর দফতরে তল্লাশি চালিয়েছিল। বিদেশী মুদ্রা বিনিময় আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে এই তল্লাশি চালানো হয়েছিল।
যদিও অ্যামনেস্টির দাবি, তারা সমস্ত ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে কাজ করে।
সরকারি সূত্রে সংবাদসংস্থাকে জানানো হয়েছে, অ্যামনেস্টির বিরুদ্ধে ইডি-র কোনও তদন্ত হয়নি। তদন্ত ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে, যারা সন্দেহজনক রফতানি আয় মারফত্ ৫১ কোটি টাকা পেয়েছিল।
এদিন অ্যামনেস্টি যে অভিযোগ করেছে, তা খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এক বিবৃতিতে কেন্দ্র বলেছে, অ্যামনেস্টি যে অবস্থান নিয়েছে এবং যে সব অভিযোগ তুলেছে, সেগুলি অতিরঞ্জিত, দুর্ভাগ্যজনক ও সত্যের অপালাপ।
অ্যামনেস্টির বেছে বেছে নিশানা করার অভিযোগ খারিজ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বলেছে, বিদেশি অনুদানপ্রাপ্ত কোনও সংস্থাকে অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক বিতর্কে হস্তক্ষেপের অনুমতি দেয় না ভারত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বলেছে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিদেশি অনুদান (নিয়ন্ত্রণ) আইন (এফসিআরএ)-তে মাত্র একবার এবং তাও কুড়ি বছর আগে অনুমতি পেয়েছিল। তারপর থেকে বারেবারে আবেদন করলেও সংস্থাকে এফসিআরএ অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কারণ, আইন অনুযায়ী এ ধরনের অনুমোদন তারা পেতে পারে না। এফসিআরএ-র নিয়ন্ত্রণ পাশ কাটাতে ভারতে নথিভূক্ত চারটি সংস্থাকে অ্যামনেস্টি ইউকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছিল প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি হিসেবে দেখিয়ে। এভাবে ঘুরপথে অর্থ প্রেরণ আইন বিরুদ্ধ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আরও বলেছে, অ্যামনেস্টির এ ধরনের বেআইনি কার্যকলাপের জন্য আগের সরকারও তাদের বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহের বারংবার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল। এরফলে এর আগেও ওই সময় আমনেস্টিকে ভারতে কাজ বন্ধ করে দিতে হয়েছিল।
অ্যামনেস্টির অভিযোগকে বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংস্থার চলতি তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা বলেও মন্তব্য করেছে।