কলকাতা: আনন্দপুরকাণ্ডে ৩৫ দিনের মাথায় আলিপুর আদালতে চার্জশিট জমা দিল পুলিশ।
সূত্রের খবর, ওই চার্জশিটে আদালতের কাছে অভিযোগকারিণী তরুণীর বিরুদ্ধেই মামলা রুজু করার অনুমতি চেয়েছে পুলিশ। আলিপুর আদালত তা মঞ্জুর করেছে। অন্যদিকে, তরুণীর বন্ধু অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, গুরুতর আঘাত করা যাতে প্রাণহানি হতে পারে এবং শ্লীলতাহানির ধারা দেওয়া হয়েছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর রাত সওয়া ১২টা নাগাদ আনন্দপুর থানা এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে খবর, এক অনুষ্ঠান সেরে গাড়িতে ফিরছিলেন দম্পতি দীপ শতপথি ও নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়। রাস্তায় একটি হন্ডা সিটি গাড়ি থেকে এক তরুণীর আর্তনাদ শুনে এগিয়ে যান নীলাঞ্জনা। রাস্তা আটকানোর চেষ্টা করলে তরুণীকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে নীলাঞ্জনাকে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যায় হন্ডা সিটি। প্রতিবাদকারী নীলাঞ্জনার বাঁ পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায় চাকা।
গুরুতর আহত অবস্থায় বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ছিলেন নীলাঞ্জনা। পরে তিনি ছাড়া পান। ওই ঘটনায় পরে পুলিশি তদন্তে প্রকাশ পায়, যাঁকে গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, সেই তরুণী পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়েছেন। সেই কারণেই আগে যে ধারা দেওয়া হয়েছিল, তা বদল হয়েছে চার্জশিটে।
পুলিশ সূত্রে দাবি, তরুণী বলেছিলেন, অভিযুক্ত যুবককে তিনি বেশিদিন চিনতেন না। অথচ তদন্তে উঠে এসেছে, তরুণীর সঙ্গে অভিযুক্তের দীর্ঘদিনের পরিচয়। তাঁদের বিয়ে হওয়ারও কথা ছিল। তরুণী প্রথমে অভিযুক্তের নাম বলেছিলেন অমিতাভ বসু। পরে দেখা যায় অভিযুক্তের নাম অভিষেক পাণ্ডে।
পুলিশের দাবি, পরিচয় জেনেও অভিযুক্ত সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী। অভিযুক্তর সঙ্গে তাঁর মোবাইল ফোনের চ্যাট ডিলিট করে দিয়েছিলেন তরুণী। এমনকী, তিনি পুলিশকে কী কী তথ্য দিয়েছেন, তাও অভিযুক্তকে জানিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী।
সেই কারণে তরুণীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২০১ ধারা অর্থাত্, পুলিশকে ভুল তথ্য দেওয়া এবং ২১২ ধারা অর্থাত্, অভিযুক্তকে আশ্রয় দেওয়ার ধারায় মামলা রুজুর আবেদন জানায় পুলিশ। আলিপুর আদালত তা মঞ্জুর করেছে।
অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিটে খুনের চেষ্টা, শ্লীলতাহানি, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো সহ একাধিক ধারা দেওয়া হয়েছে। ৭ পাতার চার্জশিটে ৩২ জনের সাক্ষ্য রয়েছে। গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন চার জন। এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন অভিষেক।