২০২৪ সালের ১২ জুলাই মুকেশ আম্বানি ও নীতা আম্বানির কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত আম্বানির সঙ্গে বীরেন ও শৈলা মার্চেন্টের কন্যা রাধিকা মার্চেন্টের বিবাহ উপলক্ষ্যে সমগ্র মুম্বই পরিণত হয়েছিল বিশ্বাস, সংস্কৃতি এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতির এক সঙ্গমস্থল। জিও ওয়ার্ল্ড কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই বিরাট আয়োজন কেবলই একটি তারকাখচিত বিবাহ অনুষ্ঠান ছিল না। একইসঙ্গে এই বিবাহ ছিল আধ্যাত্মিক ও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান যা ভারতের ক্রমবর্ধমান বিশ্বব্যাপী উপস্থিতির পাশাপাশি তার গভীর ঐতিহ্যের শিকড়কেও তুলে ধরে।

কেউ কেউ এই বিবাহ অনুষ্ঠানকে বলেছেন ‘ভারতের একমাত্র নিজস্ব রাজকীয় বিবাহ অনুষ্ঠান’, আর এই অনুষ্ঠান ভারতকে শুধুমাত্র একটি সাংস্কৃতিক শক্তিকেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরেনি, বরং একইসঙ্গে আধ্যাত্মিক পথনির্দেশকের স্তরেও উন্নীত করেছিল। আয়োজকরা জানিয়েছেন, ‘নিখুঁতভাবে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান তথা গভীর আধ্যাত্মিক এই অনুষ্ঠান একটি আধ্যাত্মিক রাজধানী হিসেবে ভারতের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে।‘

অধ্যাত্ম জগতের খ্যাতনামারা এই অনুষ্ঠানকে সর্বাঙ্গসুন্দর করে তোলেন

আধ্যাত্মিক পরম্পরার মধ্যে এক অনবদ্য ঐক্যের প্রদর্শনী ছিল এই বিবাহ অনুষ্ঠান, বৈদিক ও ধর্মীয় নানা ঐতিহ্যের ধর্মীয় প্রধানদের বৃহত্তম সমাবেশগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল। শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-

স্বামী সদানদ সরস্বতী, দ্বারকার শঙ্করাচার্য

স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী, যোশীমঠের শঙ্করাচার্য

গৌরাঙ্গ দাস প্রভু, বিভাগীয় পরিচালক, ইস্কন

গৌর গোপাল দাস, সন্ত, ইস্কন

রাধানাথ স্বামী, গভর্নিং বডির সদস্য, ইস্কন

পূজ্যশ্রী রমেশভাই ওঝা

পূজ্যশ্রী দেবপ্রসাদ মহারাজ

বিজুবেন রজনী, শ্রী আনন্দবাবা সেবা সংস্থা

শ্রী বালক যোগেশ্বরদাসজী মহারাজ, বদ্রীনাথ ধাম

পূজ্যশ্রী চিদানন্দ সরস্বতী, পরমার্থ নিকেতন আশ্রম

শ্রী নম্রমুনি মহারাজ, জৈন সন্ত, প্রসাধম-এর প্রতিষ্ঠাতা

ধীরেন্দ্র কুমার গর্গ, গুরু, বাগেশ্বর ধাম

বাবা রামদেব, যোগগুরু

স্বামী রামভদ্রাচার্য

স্বামী কৈলাসানন্দ, মহামণ্ডলেশ্বর জুনা আখড়া

অবধীশানন্দ গিরি, মহামণ্ডলেশ্বর, জুনা আখড়া

শ্রী দেবীকন্দন ঠাকুরজী মহারাজ, বিশ্বশান্তি সেবা ট্রাস্ট

দিদি মা সাধ্বী ঋতাম্ভরাজী, বাৎসল্য গ্রাম

স্বামী পরমাত্মানন্দজী, পরম শক্তি পীঠের প্রতিষ্ঠাতা

শ্রী বিশাল রাকেশজী গোস্বামী, শ্রীনাথজী মন্দিরের মূল পুরোহিত

এই সন্তদের উপস্থিতি, বৈদিক মন্ত্র এবং আচার অনুষ্ঠানের সঙ্গে মিলিত হয়ে বিবাহকে একটি আধ্যাত্মিক মেলবন্ধনে পরিণত করেছিল যা ভারতের প্রাচীন জ্ঞানের উদযাপন করেছিল।

রাষ্ট্রপ্রধান, আন্তর্জাতিক ও সাংস্কৃতিক খ্যাতনামারা উপস্থিত ছিলেন

বিবাহের আধ্যাত্মিক গভীরতা বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং ব্যবসায়িক প্রধানদের এক আলো-ঝলমলে সমাবেশের মাধ্যমে ভারসাম্যপূর্ণ ছিল, যা আন্তর্জাতিক বিষয়ে ভারতের মর্যাদাকে প্রতিপন্ন করে। এই অতিথি তালিকায় যারা ছিলেন তারা বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক স্তরের সমস্ত বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব-

জন কেরি, মার্কিন রাজনীতিবিদ

টনি ব্লেয়ার, যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী

বরিস জনসন, যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী

মাত্তেও রেনজি, ইতালির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী

সেবাস্টিয়ান কুর্জ, অস্ট্রিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী

স্টিফেন হার্পার, কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী

কার্ল বিলডট, সুইডেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী

মহম্মদ নাশিদ, মলদ্বীপের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি

সামিয়া সুলুহু হাসান, তাঞ্জানিয়ার রাষ্ট্রপতি

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক জগতের শীর্ষস্থানীয় আধিকারিক, নির্বাহীরাও উপস্থিত ছিলেন এই বিবাহ অনুষ্ঠানে-

আমিন নাসির, আরামকোর প্রেসিডেন্ট ও সিইও

মাননীয় খালদুন আল মুবারক, সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর, মুবাদালা

মারি অচিনক্লস, সিইও, বিপি

রবার্ট ডুডলি, প্রাক্তন সিইও, বিপি, বোর্ড মেম্বার- আরামকো

মার্ক টাকার, গ্রুপ চেয়ারম্যান, এইচএসবিসি হোল্ডিংস

বার্নার্ড লুনি, প্রাক্তন সিইও, বিপি

শান্তনু নারায়ণ, সিইও, অ্যাডোব

মাইকেল গ্রিমস, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, মর্গ্যান স্ট্যানলি

ইগর সাচিন, সিইও, রোজনেফট

জে লী, এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান, স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স

দিলহান পিল্লাই, সিইও, টেমাসেক হোল্ডিংস

এমা ওয়াল্মস্লি, সিইও, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন

ডেভিড কনস্টেবল, সিইও, ফ্লুওর কর্পোরেশন

জিম টেগ, সিইও, এন্টারপ্রাইজ জিপি

জিয়ান্নি ইনফান্টিনো, আইওসি সদস্য, ফিফার প্রেসিডেন্ট

জুয়ান আন্তোনিও সামারাঞ্চ, সহ সভাপতি, আইওসি

গোজি ওকোঞ্জো ইজুয়েলা, ডিরেক্টর জেনারেল, ডব্লিউটিও

দীনেশ পালিওয়াল, পার্টনার, কেকেআর

লিম চো কিয়াট, সিইও, জিআইসি

মাইকেল ক্লেইন, ম্যানেজিং পার্টনার, এম ক্লেইন অ্যান্ড কোম্পানি

বদর মহম্মদ আল সাদ, ডিরেক্টর, কেআইএ

ইয়োশীহিরো হায়াকুটুম, সিনিয়র ম্যানেজিং এক্সিকিউটিভ অফিসার, এসএমবিসি

কলিল মহম্মদ শরীফ ফৌলাথি, ভাইস চেয়ারম্যান এডিআইএ

পিটার ডায়ামান্ডিস, এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান, সিঙ্গুলারিটি ইউনিভার্সিটি

জেমস টেইকলেট, সিইও, লকহিড মার্টিন

এরিক ক্যান্টর, ভাইস চেয়ারম্যান, মোয়েলিস অ্যান্ড কোম্পানি

এনরিক লরেস, প্রেসিডেন্ট ও সিইও, এইচপি ইনকর্পোরেটেড

বোর্জে একহোম, প্রেসিডেন্ট ও সিইও, এরিকসন

উইলিয়াম লিন, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, বিপি

টমি ইউটো, প্রেসিডেন্ট, নোকিয়া মোবাইল নেটওয়ার্কস

আধুনিক ভারতের প্রতিচ্ছবি এই বিবাহ

এই বিপুল জাঁকজমকের বাইরেও এই বিবাহ অনুষ্ঠান এক শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে। আজকের ভারত আত্মবিশ্বাসী, আধ্যাত্মিক, ঐক্যবদ্ধ এবং বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং আম্বানি পরিবারের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশ্বব্যাপী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এত বিপুল সমাবেশ আয়োজনের ক্ষমতা গভীর, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অর্থপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টা ও মনোভাবকেই তুলে ধরে’।

অতিথি তালিকা, আধ্যাত্মিক অনুরণন এবং অনুষ্ঠানের পরিধি সব মিলিয়ে একটি জিনিস স্পষ্ট করে তুলেছিল যে এটি কেবল একটি বিবাহ ছিল না, এটি ছিল জাতীয় গর্বের মুহূর্ত।