হায়দরাবাদ: অন্ধ্রপ্রদেশের হাইওয়ে হত্যাকাণ্ড মামলায় ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল স্থানীয় আদালত। যাবজ্জীবনের সাজা শোনানো হয়েছে ৭ জনকে। ২০০৮ সালে চেন্নাই-কলকাতা হাইওয়েতে ১৩জন ট্রাক চালক ও খালাসিকে হত্যাকাণ্ডে এই সাজা শুনিয়েছে অন্ধ্রের আদালত।
অঙ্গোলের আদালতে এই সাজা শুনিয়েছেন অষ্ঠম জেলা অতিরিক্ত সেশন কোর্টের বিচারক জি মনোহর রেড্ডি। যিনি মামলার পুরো বিবরণ শোনার পরই চার্জশিটের ভিত্তিতে রায় শোনান। মোট সাতটি মমালার মধ্যে চারটির রায় শোনান বিচারক। যার মধ্যে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৭ জনকে যাবজ্জীবন সাজা শোনানো হয়েছে। তবে অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডের বিষয় নিশ্চিত করেনি এখনও।
প্রকাশমের জেলা পুলিশ জানিয়েছে, হাইওয়ে হত্যাকাণ্ডের পিছনে মূল পান্ডা হল মহম্মদ আবদুল সামাদ ওরফে মুন্না। শাগরেদদের নিয়ে চেন্নাই-কলকাতা জাতীয় সড়ক ১৬তে ট্রাক চালকদের লুটপাটের ষড়যন্ত্র করে সে। ২০০৮ সালে নিজেই কমার্শিয়াল ট্যাক্স অফিসার সেজে হাইওয়েতে ট্রাক দাঁড় করাত মুন্না। ট্রাক চালকদের থেকে চাওয়া হত গাড়ির বৈধ নথি।
একবার ট্রাক থেকে চালক ও খালাসি নামলেই গাড়ি নিয়ে চম্পট দিত মুন্নার শাগরেদরা। বাকিরা চালক, খালাসিকে হত্যা করে তাদের ব্যাগে ভরত। পরে সেই মৃতদেহ সরিয়ে দেওয়া হত গভীর জঙ্গলে। গোপনে রাখা ট্রাকগুলিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে বিক্রি করা হত বাজারে। একই সঙ্গে ট্রাকের মালপত্র বিক্রি করে দেওয়া হত। ২০০৮ সালে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে ১৩ জনকে হাইওয়েতে হত্যা করে মুন্না ও তার দলবল।
প্রথমে ট্রাক ও তার চালকদের ধরতে তদন্ত শুরু করে প্রকাশম জেলার পুলিশ। যা করতে গিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় তাদের। তবে ২০০৯ সালের মধ্যেই হাইওয়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য ফাঁস করে ফেলে পুলিশ। ধরে ফেলা হয় মুন্না ও তার গ্যাংকে। পরে ২০১৩ সালে জামিনে মুক্তি পায় মুন্না। সেখান থেকে কুর্নুলে গিয়ে ঘাঁটি গাড়ে সে। সেই সময় কুর্নুলে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার ছক কষছিল মুন্না। ২০১৪ সালেই ফের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। সেই থেকেই জেলে ছিল মুন্না।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৯৬ ধারা(একসঙ্গে পাঁচজন ব্যক্তি বা তাঁর বেশি লোক কোনও ডাকাতি ও খুনের উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়া), ১২০-বি(অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া), ৪১২ (অন্যের সম্পত্তির ওপর অধিকার ফলানো), ৪০০ (দল নিয়ে ডাকাতি) ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। দেওয়া হয় অস্ত্র রাখার ২৫ (১-এ) মামলা। যার ভিত্তিতে সাজা শুনিয়েছে আদালত।