নয়াদিল্লি: মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়েছেন আগেই। এবার সরকারি বাসভবনও ছাড়ছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ বাসভবনেই এতদিন ছিলেন আম আদমি পার্টির সর্বভারতীয় আহ্বায়ক। এবার ফিরোজশাহ রোডে মান্ডি হাউজের কাছে অন্য একটি বাংলোয় সরে যাচ্ছেন তিনি। দলের রাজ্যসভার সাংসদ অশোক মিত্তলের জন্য ওই বাংলোটি বরাদ্দ রয়েছে বর্তমানে। সেখানেই আপাতত উঠবেন কেজরিওয়াল। শুক্রবারই মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন কেজরিওয়াল। (Arvind Kejriwal)
বৃহস্পতিবার আম আদমি পার্টির তরফে এই ঘোষণা করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ সিভিল লাইনের ৬ নং ফ্ল্যাগস্টাফ রোডের বাসভবন ছাড়ছেন কেজরিওয়াল। আপাতত অন্যত্র আশ্রয় নেবেন তিনি। শুধু কেজরিওয়ালই নন, দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়াও সরকারি বাংলো ছেড়ে দিচ্ছেন। তিনিও পরিবারকে নিয়ে সরে যাচ্ছেন অন্যত্র। (Aam Aadmi Party)
আবগারি দুর্নীতি মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসার পর আচমকাই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়ার ঘোষণা করেন তিনি। এর পর, ১৭ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। পদত্যাগের পরও মুখ্যমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ বাসভবনেই থাকছিলেন কেজরিওয়াল। সেই আবহেই এদিন সরকারি বাংলো ছাড়ছেন বলে ঘোষণা হল। ফিরোজশাহ রোডের যে বাংলোয় আপাতত উঠছেন কেজরিওয়াল, সেখান থেকে আম আদমি পার্টির দলীয় কার্যালয়ের দূরত্ব সামান্যই। পাশাপাশি, নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র নয়াদিল্লিতে কাজেও সুবিধা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন, মানুষের আদালতে নিজেকে তুলে দিচ্ছেন তিনি। মানুষ যদি তাঁর পক্ষে রায় দেন, তবেই ফের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসবেন। কেজরিওয়াল জানান, জামিনে মুক্তি পেলেও ১৫-২০ বছর মামলা চলতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তাই মানুষের আদালতে নিজেকে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। আবগারি দুর্নীতি মামলায় তিনি দোষী না নির্দোষ, তা মানুষই ঠিক করবেন।
কেজরিওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়ার পর ওই আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন দলের নেত্রী অতিশী। পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনের ফলঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তিনি ওই পদে থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। তবে কেজরিওয়ালের পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে 'মাস্টারস্ট্রোক' বলে উল্লেখ করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন রয়েছে। আবার বিজেপি যেভাবে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করছিল, তাতে বিধানসভা নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারত। সেই আবহে পদত্যাগ করে ভাবমূর্তি উদ্ধারে যেমন সচেষ্ট হলেন কেজরিওয়াল, তেমনই বিজেপি-র পরিকল্পনা ভেস্তে দিলেন।