গুয়াহাটি: সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল আগেই। সোমবার অসম বিধানসভায় সরকার-পরিচালিত সব মাদ্রাসা তুলে দেওয়ার ব্যাপারে বিল পেশ করল ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বিরোধী শিবিরের প্রতিবাদ, আপত্তি উপেক্ষা করেই বিলটি পেশ করেন সভায়। সরকারি মাদ্রাসাগুলিকে আপার প্রাইমারি, হাই ও হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে পরিণত করা হবে বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে এও জানান, ওই স্কুলগুলির শিক্ষক ও অ-শিক্ষক কর্মচারীদের পদ, বেতন,ভাতা ও চাকরির শর্তে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। আজ পেশ হওয়া বিলের উদ্দেশ্য, দুটি চলতি আইন অসম মাদ্রাসা শিক্ষা (প্রাদেশিকীকরণ) আইন, ১৯৯৫, অসম মাদ্রাসা শিক্ষা (কর্মচারীদের চাকরির প্রাদেশিকীকরণ ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন) আইন, ২০১৮ এর বিলোপ ঘটানো।
হিমন্তকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের খবর, আমরা একটি বিল পেশ করেছি, যার মাধ্যমে সব মাদ্রাসাকে সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে, আগামীদিনে সরকার কোনও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করবে না। শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষতা চালুর লক্ষ্যে এই বিল পেশ করতে পেরে আমরা খুশি। বেসরকারি মাদ্রাসাগুলি নিয়ন্ত্রণ ও বাতিল করা এই বিলের লক্ষ্য নয় বলেও জানান তিনি। সেইসঙ্গে বলেন, বিলের লক্ষ্য ও কারণ সংক্রান্ত বিবৃতিতে ‘বেসরকারি’ শব্দটা ঢোকানো ভুল হয়েছে। কংগ্রেস ও অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট বিলের বিরোধিতা করেছে বলে জানিয়ে তিনি স্পষ্ট বলেন, তা সত্ত্বেও বিলটি পাশ করাতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও তা পাশ হবেই।
গোটা অসমে ৬১০টি সরকার পরিচালিত মাদ্রাসা আছে বলে আগে জানিয়েছিলেন হিমন্ত।
প্রসঙ্গত, কোভিড নিয়ন্ত্রণবিধি মেনেই আজ অসম বিধানসভার তিনদিনের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়।
সকালেই হিমন্ত ট্যুইট করেন, আজ মাদ্রাসার প্রাদেশিকীকরণ বাতিলের লক্ষ্যে বিল পেশ করব। বিলটি পাশ হলেই অসমে সরকারের মাদ্রাসা চালানোর রীতি বন্ধ হবে, যা এককালে প্রাক-স্বাধীনতা কালে অসমে শুরু করেছিল মুসলিম লিগ সরকার। পাশাপাশি বলেন, ১৯৩৪ সালে অসমের প্রধানমন্ত্রী স্যার সৈয়দ সাদুল্লার নেতৃত্বে মুসলিম লিগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় মাদ্রাসা শিক্ষা চালু হয়, রাজ্য মাদ্রাসা বোর্ডও গঠিত হয়। ম্যাট্রিক স্তর পর্যন্ত স্বাভাবিক কোর্সেও ৫০ নম্বরের একটা অধ্যায় রাখা হয় কোরান শিক্ষার ওপর। গতকাল অসম মন্ত্রিসভা ঠিক করে, শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার ঘটিয়ে তাকে ধর্মনিরপেক্ষ করে তোলা হবে , তাই এখন সব হাই মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে যাবে, এধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর যে কোনও প্রতিষ্ঠানের মতো সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করা হবে।