ঠিকানা ডিটেনশন সেন্টার, মৃত্যুর পর অসমে ‘বিদেশী’র দেহ নিতে নারাজ পরিবার
Web Desk, ABP Ananda | 15 Oct 2019 06:08 PM (IST)
‘যদি তিনি বিদেশীই হয়ে থাকেন, তাহলে সরকারই ঠিক করুন, দেহ সৎকারের জন্য বাংলাদেশে পাঠাবে কি না।’, বক্তব্য পরিবারের। সরকারের থেকে লিখিত পাওয়ার আগে কিছুতেই দেহ নেবেন না তাঁরা।
গুয়াহাটি: বিদেশি বলে চিহ্নিত করেছে সরকার। ২ বছরের বেশি কাটিয়ে দিয়েছেন ডিটেনশন সেন্টারে। নানাভাবে চেষ্টা করেও নিজের গা থেকে অভারতীয় তকমা মুছে ফেলতে পারেননি ৬৫ বছরের অসমের বাসিন্দা দুলাল চন্দ্র পাল। শেষ পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেলেন তিনি। তখনই সরকারের পক্ষ থেকে দুলাল চন্দ্র পালের পরিবারের উপর ‘চাপ সৃষ্টি’ করা হয়, যেন তাঁরা মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য করে। কিন্তু পরিবারও বসেছে বেঁকে। সত্যিই যদি দুলাল চন্দ্র বিদেশী হন, তাহলে তাঁর সৎকারের দায়িত্ব নিক সরকার। মৃতের পরিবারের দাবি, যতক্ষণ না সরকার তাঁকে ভারতীয় বলে ঘোষণা করছে, ততক্ষণ মৃতদেহ নেবেন না তাঁরা। ‘যদি তিনি বিদেশীই হয়ে থাকেন, তাহলে সরকারই ঠিক করুন, দেহ সৎকারের জন্য বাংলাদেশে পাঠাবে কি না।’, বক্তব্য পরিবারের। সরকারের থেকে লিখিত পাওয়ার আগে কিছুতেই দেহ নেবেন না তাঁরা। তাই মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পরও এখনও দুলাল চন্দ্র পালের দেহ হাসপাতালের জিম্মায়। পরিবারের দাবি, ১৯৬০ সালের আগে থেকে জমিসংক্রান্ত সব নথি আছে তাঁদের কাছে। এনআরসি তালিকাতে নাম আছে তাঁর পরিবার-পরিজনদের। কর্তৃপক্ষ গত ২ বছরে প্রমাণ করতে পারেনি, কেন তিনি বিদেশি! ডিটেনশন সেন্টারে থাকতে থাকতে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। দুলাল পালের পরিবারের বক্তব্য অনুসারে, শেষ দিকে মানসিক ভারসাম্যও হারিয়েছিলেন তিনি। ‘অল অসম বেঙ্গলি ইউথ স্টুডেন্টস ফেডারেশন’-এর তরফে বলা হয়েছে, এই ধরনের ঘটনা অসমে ঘটেই চলেছে। ডিটেনশন সেন্টারে মৃত্যুর পরই কর্তৃপক্ষ চায়, দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে। মারা যাওয়ার পরই তারা কী করে ভারতীয় হয়ে যায়? এই ধরনের ঘটনা রুখতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে তারা। ২০১১ সাল থেকে দুলাল পালকে বাদ দিলে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যের ৬টি ডিটেনশন সেন্টারে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, গোয়ালপাড়ায় আরও একটি বড় ডিটেনশন তৈরি হচ্ছে। যেখানে অভারতীয় হিসেবে চিহ্নিত ৩০০০ জনকে জায়গা দেওয়া যাবে।