কলকাতা: শহরে এটিএম প্রতারণাকাণ্ডে পুলিশের জালে ধরা পড়া গয়া গ্যাংকে জেরা করে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাদের দেওয়া তথ্য শুনে চমকে যাবেন যে কেউ। বিশেষত রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে যাঁরা ডেবিট কার্ডে বিল মেটান, তাঁদের কপালে ভাঁজ পড়বেই।
ডেবিট কার্ড প্রতারণাকাণ্ডে এবার মিলল রেস্তোরাঁ-যোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারকরা জাল বিছিয়েছে কলকাতার বেশ কয়েকটি নামী রেস্তোরাঁয়। এই তালিকায় রয়েছে পার্ক সার্কাসের একটি নামী রেস্তোরাঁও।


কলকাতার নামী রেস্তোরাঁতে কার্ড প্রতারণার জাল, গয়া গ্যাং-কে জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

শুক্রবার জানা যায়, কলকাতায় এটিএম প্রতারণাকাণ্ডে পুলিশ শিয়ালদা স্টেশন থেকে গ্রেফতার করেছে মুদাস্সার খান ও ইরফানউদ্দিন নামে দুজনকে। দুজনেই বিহারের গয়ার বাসিন্দা। তাদের জেরা করেই পুলিশ জানতে পারে, রেস্তোরাঁ কর্মীদের একাংশের যোগসাজশেই চলত প্রতারণার কারবার। ধৃতদের দাবি, খাবারের বিল ডেবিট কার্ডে দেওয়ার সময়, ক্রেতার নজর এড়িয়ে স্কিমারের সাহায্যে তথ্য ক্লোন করে নিত রেস্তোরাঁর কর্মী। সেই তথ্য মোটা টাকায় বিক্রি করা হত দুই প্রতারকের কাছে। এরপর ক্লোন কার্ড তৈরি করে এটিএম থেকে তুলে নেওয়া হত টাকা। এভাবে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকরা। পুলিশের দাবি, আড়াইশোরও বেশি ডেবিট কার্ডের তথ্য রয়েছে তাদের কাছে। কোন কোন রেস্তোরাঁয় এই চক্র জাল ছড়িয়েছে, তা জানতে ধৃতদের বাজেয়াপ্ত করা ল্যাপটপ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কীভাবে হাতিয়ে নেওয়া হত ডেবিট কার্ডের তথ্য? জানা গেছে, ক্রেতা যখন ডেবিট কার্ডে বিল মেটাতেন, তখনও কোনওভাবে কার্ডটি নিয়ে রান্নাঘরের কাছে কয়েক সেকেন্ডের জন্য চলে যেত সংশ্লিষ্ট হোটেলকর্মীরা। মুহূর্তেই স্কিমার মেশিনের সাহায্যে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হত।
সূত্রের খবর, ধৃত ২জনই যাদবপুর ও তিলজলায় ভাড়া থাকত এই দুই প্রতারক। মূলতঃ, এটিএমে আসা নিরক্ষর ও প্রবীণ গ্রাহকদের টার্গেট করত এরা। সাহায্যের প্রস্তাব দিয়ে গ্রাহকদের ডেবিট কার্ড নিত প্রতারকরা। ওই এটিএমে আগে থেকেই লাগানো থাকত স্কিমিং ডিভাইস। তার মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কার্ডের সমস্ত তথ্য হাতিয়ে নিত প্রতারকরা। এরপর কার্ড ক্লোন করে অন্য এটিএম থেকে টাকা তোলা হত। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং মেল ধরার জন্য শিয়ালদা স্টেশনে আসে মুদাস্সার ও ইরফানউদ্দিন। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩৮টি ক্লোন কার্ড, স্কিমিং ডিভাইস, ল্যাপটপ।