অযোধ্যা :  ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর। পাঁচশো বছরের বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে  অযোধ্যার বিতর্কিত জমি-মামলায় রায় ঘোষণা করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। একশো চৌত্রিশ বছরের আইনি বিতর্কের অবসান ঘটে সেদিন। ঐতিহাসিক অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট বলে, অযোধ্যায় বিতর্কিত জমি ‘ বিরাজমান রামলালার’। সেই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে মসজিদের জন্য অন্যত্র ৫ একর জমি দিতে হবে। সরকার অধিগৃহীত জমি থেকেই ৫ একর জমি দিতে পারে কিংবা অযোধ্যায় অন্যত্র জমি দিতে পারে। ট্রাস্ট তৈরি করে অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণ করতে হবে। 


সেই মসজিদ আজও নির্মাণ হয়নি। কেন ? অযোধ্যায় রামলালার মূর্তির প্রাণপ্রতিষ্ঠার আবহে এই প্রশ্নটাও অনেকের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যা শহর থেকে প্রায় পঁচিশ কিলোমিটার দূরে ধান্নিপুর গ্রামে এই মসজিদ তৈরি হওয়ার কথা। সেখানে এখনও নেই মসজিদের ইট-কাঠ-পাথর। স্বল্প বসতির মাঝে পড়ে রয়েছে বড় একটি খালি জমি ।  


২০১৯ সালে অযোধ্যা মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে বলা বলে, তাদেরকে পাঁচ একর জমি দেওয়া হবে, যেখানে তারা একটি মসজিদ তৈরি করতে পারবে। সেই জমিতে মসজিদটি নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় ওয়াকফ বোর্ডের তৈরি করা সংস্থা ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনকে (Indo-Islamic Cultural Foundation )।  


ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের (আইআইসিএফ) উন্নয়ন কমিটির প্রধান হাজি আরফাত শেখ সম্প্রতি জানান, পবিত্র রমজান মাসের পর মে মাসে নির্মাণ কাজ শুরু হবে এবং মসজিদটি নির্মাণের জন্য লাগবে তিন থেকে চার বছর। 


আইআইসিএফ-এর সভাপতি জুফর আহমদ ফারুকি (president of the IICF)  জানিয়েছেন, আমরা তহবিলের জন্য কারও কাছে যাইনি। কোনও জন আন্দোলন ছিল না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি  ভারতীয় জনতা পার্টির সাহায্যে  তিন দশকেরও বেশি আগে থেকে অনুদান চাইতে শুরু করেছেন এবং  বর্তমানে ভারতের ৪০ মিলিয়ন মানুষের কাছ থেকে ৩০ বিলিয়ন টাকা সংগ্রহ করেছেন।  


আইআইসিএফ-এর সেক্রেটারি আতহার হুসেন বলেন, এই  নির্দিষ্ট জমিতে একটি ৫০০ শয্যার হাসপাতালও পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে একটি ক্রাউড-ফান্ডিং ওয়েবসাইট চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।  আতহার হুসেন একজন বিজেপি নেতাও। তিনি জানিয়েছেন, হজরত মোহাম্মদের নামানুসারে নতুন মসজিদের নাম হবে Masjid Muhammed bin Abdullah। । বাবরি মসজিদ নয় ! 


"আমাদের প্রচেষ্টা ছিল মানুষের মধ্যে শত্রুতা,ঘৃণাকে একে অপরের প্রতি ভালবাসায় পরিণত করা এবং রূপান্তর করা... আপনি সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে নিন বা না নিন " বলেন শেখ। "আমরা যদি আমাদের বাচ্চাদের এবং জনগণকে ভাল জিনিস শেখাতে পারি তবে এই সমস্ত লড়াই বন্ধ হয়ে যাবে।"


আরও পড়ুন : 


রামভূমি অযোধ্যার দর্শন করুন এবিপি মেটাভার্সে। ক্লিক করুন।