প্রয়াগরাজ: ফের প্রাণপ্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে অযোধ্যার রামমন্দির। একবছর আগেই ‘রামলাল্লা’ অর্থাৎ শিশু বয়সের রামচন্দ্রের মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এবার রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে 'রাজারামে'র। অর্থাৎ ‘রামরাজ্যে’র প্রধান, ভগবান রামচন্দ্রের। মন্দিরের দোতলায় রামদরবার অর্থাৎ রাজদরবারেরও উদ্বোধন হবে। (Ayodhya Ram Temple)


চলতি আগামী মে মাসেই রামমন্দিরে ‘রাজারামে’র মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে। গতবছর ২২ জানুয়ারি ‘রামলাল্লা’র মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠার জন্য যে বিপুল আয়োজন হয়েছিল, যেখানে মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যেখানে ৮০০০-এর বেশি অতিথি অংশ নেন, এবার ততটা জাঁকজমক হবে না বলেই শোনা যাচ্ছে। (Ram Temple Concretion)


‘রাজারামে’র মূর্তি প্রতিষ্ঠার সঙ্গে রামমন্দিরের নির্মাণকার্যও সম্পূর্ণ হবে। ২০২০ সালে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। বর্তমানে মন্দির নির্মাণ কমিটিতে রয়েছেন নৃপেন্দ্র মিশ্র, যিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন প্রধান সচিব। তিনি জানিয়েছেন, চলতি মাসের শেষেই মন্দিরের কাজ সম্পূর্ণ হবে। মন্দির চত্বরকে ঘিরে যে দেওয়াল রয়েছে, তা শেষ হবে বছর শেষ হওয়ার আগেই। 


নৃপেন্দ্র বলেন, “২০০০০ কিউবিক ফুটের পাথর এখনও পাতা বাকি। ১৫ এপ্রিলের মধ্যে মন্দিরের নির্মাণকার্য সম্পূর্ণ হবে। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে  মন্দিরের ভিতর এবং বাইরের সমস্ত মূর্তি চলে আসবে।”


রামমন্দিরে ৫১ ইঞ্চি দীর্ঘ ‘রামলাল্লা’র মূর্তি আগেই প্রতিস্থাপিত হয়েছে। কর্নাটকের শিল্পী অরুণ যোগীরাজ সেটি তৈরি করেন। রাম দরবার তৈরি হচ্ছে জয়পুরে। ২০ জনশিল্পী সেই কাজে হাত লাগিয়েছেন, যাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভাস্কর্য শিল্পী প্রশান্ত পাণ্ডে। শ্বেতপাথরের উপর কাজ হবে।  ‘রামচরিতমানসে’র স্রষ্টা তুলসিদাসের একটি প্রকাণ্ড মূর্তিও বসবে মন্দির চত্বরে। 


পাশাপাশি, ‘আন্তর্জাতিক রামকথা মিউজিয়াম’ গড়ে তোলার কাজও চলছে। মূল মন্দির থেকে চার কিলোমিটার দূরে সেটি নির্মিত হচ্ছে।  ‘রামায়ণে’র একাধিক ঘটনাবলীর পাশাপাশি, রামজন্মভূমি আন্দোলনের বিভিন্ন মুহূর্ত তুলে ধরা হবে মিউজিয়ামে।


রামমন্দির নির্মাণেের দায়িত্বে রয়েছে 'শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট'। এখনও পর্যন্ত যে তথ্য হাতে এসেছে, তাতে মন্দির নির্মাণে ২১৫০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। ২০২০ সালে ট্রাস্ট গঠিত হয়। সেই থেকে পাঁচ বছর ধরে চলেছে নির্মাণকার্য। সম্প্রতি রামমন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর রামমন্দিরে আপাতত কোনও প্রধান পুরোহিত না নিযুক্ত করার সিদ্ধান্তই গৃহীত হয়েছে। ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট মহন্ত নৃত্যগোপাল দাস এবং বোর্ডের ১৫ জনের মধ্যে ১২ সদস্যের বৈঠক নেওয়া হয় ওই সিদ্ধান্ত। 


ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে ৩৯৬ কোটি টাকার কর, সেস এবং পরিষেবা কর দিয়েছে ট্রাস্ট। জিএসটি বাবদ সরকারকে ২৭১ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। পুণ্যার্থীরা ট্রাস্টকে ৯৪৪ কেজি রুপো দান করেছেন, যার মধ্যে ৯২ শতাংশই বিশুদ্ধ রুপো।