ঢাকা : হাজার হাজার মানুষের জমায়েত। তার মধ্যেই শনিবার ঢাকার শাহবাগ চত্বরে হাসিনা বিরোধী ছাত্রনেতা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে সমাধিস্থ করা হয়। এরপরই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হল সংগঠনের তরফে। ওসমান হাদিকে যারা খুন করেছে তাদের গ্রেফতারির বিষয় কতটা এগলো তা জানাতে হবে এই ডেডলাইনের মধ্যে। হাদিকে শেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে এদিন সাতসকাল থেকে একে একে বহু মানুষ জমায়েত শুরু করেন মানিক মিঞা অ্যাভনিউতে। কেউ কেউ গায়ে বাংলাদেশের পতাকা জড়িয়ে আসেন। অনেকে আবার হাদি-হত্যার ন্যায়বিচার চেয়ে স্লোগান তোলেন। 

Continues below advertisement

হাদিকে সমাধিস্থ করার পর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে মুখ্য উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বক্স চৌধুরীর কাছে মঞ্চের তরফে হাদির-হত্যাকারীদের গ্রেফতারির বিষয় কতটা এগলো তার রিপোর্ট জানাতে বলা হয়। সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে এনিয়ে না জানাতে পারলে তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে।

'প্রথম আলো'র তথ্য অনুযায়ী, ইনকিলাব মঞ্চের মেম্বার সেক্রেটারি আবদুল্লা অল জাবের সরকারি আধিকারিকদের চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। তিনি বলেন, "আগামী ২৪ ঘণ্টা পর, স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা (জাহাঙ্গির আলম চৌধুরা) ও সহকারী উপদেষ্টা (খোদা বক্স চৌধুরী)-কে জনগণের সামনে এসে ব্যাখ্যা করতে হবে গত সপ্তাহ থেকে কতটা এগিয়েছেন। যদি তাঁরা উত্তর দিতে না পারেন, তাহলে তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে। সাধারণে মধ্যে এবং মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে লুকিয়ে থাকা আওয়ামি জঙ্গিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে হবে।"

Continues below advertisement

কোটা আন্দোলনের অন্যতম মুখ, শেখ হাসিনা বিরোধী ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান বিন হাদির খুনের পর প্রতিবাদের নামে চরম নৈরাজ্য় শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। আবার মাথাচাড়া দিয়েছে মৌলবাদীদের তাণ্ডব। খুন, তাণ্ডব, ভাঙচুর,লুঠপাট, কিছুই বাদ যায়নি। উঠেছে ভারত-বিদ্বেষী স্লোগানও। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া তাণ্ডব পুরোপুরি থামেনি শনিবারও। ময়মনসিংহের ভালুকায় দীপুচন্দ্র দাস নামে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করে প্রকাশ্য়ে তাঁর মৃতদেহ জ্বালিয়ে দিয়েছিল উন্মত্ত দুষ্কৃতীরা। এবার সামনে এল দুষ্কৃতীদের নৃশংসতার আরও এক হাড় হিম করা নজির। BNP নেতা বেলাল হোসেনের বাড়ির দরজায় তালা লাগিয়ে, আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় BNP নেতার ৭ বছরের মেয়ের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও তিনজন। শুক্রবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত সংস্কৃতিকেন্দ্র ছায়ানটে চলেছিল ধ্বংসযজ্ঞ। বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে রেহাই পায়নি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমূল্য় বই, নজরুল ইসলাম থেকে লালন ফকিরের ছবি। এবার আগুন লাগানো হল ঢাকার অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।