মঙ্গডাও : আরও চাপ বাড়ছে বাংলাদেশের। পশ্চিম রাখাইন প্রদেশে থাকা সামরিক সদর দফতর দখলের ঘোষণা করল মায়ানমারের বিদ্রোহী সেনা। যার জেরে মায়ানমারের শাসকদলের পাশাপাশি চাপ বাড়ল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারেরও, এমনই বলছে ওয়াকিবহাল মহল। জুন্টা-বিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনের অন্যতম আরাকান আর্মি দাবি করছে, দুই সপ্তাহ ধরে টানা গুলির লড়াইয়ের পর ওয়েস্টার্ন মিলিটারি কমান্ড দখল করে নিয়েছে তারা। শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে তাদের তরফে বলা হয়, "এই জয় উভয় পক্ষের দ্বন্দ্বে একটি টার্নিং পয়েন্ট।" যদিও এনিয়ে কোনও বিবৃতি জারি করেনি মায়ানমারের সামরিক সরকার। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে মায়ানমারে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেয় সামরিক শক্তি। তার পর থেকেই দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে চলছে অস্থিরতা। যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়।


রাখাইন, বাংলাদেশ এবং বঙ্গোপসাগরের সীমান্তবর্তী একটি উপকূলীয় রাজ্য। মায়ানমারের সবচেয়ে দরিদ্র অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। যদিও এখানে রয়েছে অফশোর প্রাকৃতিক গ্যাসের রিজার্ভ এবং কিয়াউক পিউতে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল, যা চিনে তেল ও গ্যাস বহনকারী পাইপলাইনগুলির জায়গা করে দিয়েছে।


বাংলাদেশে অশান্তির আবহেই মায়ানমার সীমান্তে এই পরিস্থিতি, ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকারের চাপ বাড়াতে পারে বলে মনে করছে অনেকেই। ফের রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল নামার প্রমাদ গুনছে ইউনূস প্রশাসন। অথচ বাংলাদেশের কেউ স্বপ্ন দেখছেন চার দিনে কলকাতা দখল করে নেওয়ার ! কেউ আবার ভারতের বিরুদ্ধে দেশের নাগরিকদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিতে চাইছেন ! কিন্তু, যুদ্ধজিগির তোলা সেই বাংলাদেশের কাছেই এখন বড় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মায়ানমার সীমান্ত। সম্প্রতি বাংলাদেশ-মায়ানমারের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত দখলে নেয় আরাকান আর্মি। সীমান্তবর্তী নাফ নদীর নিয়ন্ত্রণও নেয় তারা। এখন নিজেদের সীমান্তই সুরক্ষিত রাখা নিয়ে চাপে রয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড। বিদ্রোহ-বিধ্বস্ত প্রতিবেশী মায়ানমারে কোণঠাসা জুন্টা সরকার। 


রাখিন প্রদেশ কেন গুরুত্বপূর্ণ ?


মায়ানমার জুড়ে চলতে থাকা গৃহযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এই রাখিন। যেখানে গণতন্ত্রপন্থী গেরিলা ও সংখ্যালঘু উপজাতির সশ্ত্র বাহিনী স্বশাসনের দাবিতে দেশের সামরিক শাসকের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। আং স্যান সু কি-র নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০২১ সালে ক্ষমতা দখল করে এই সামরিক শাসক। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত রাখিনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১১টিতে নিয়ন্ত্রণ লাভ করে আরাকান আর্মি। এর একটি রয়েছে প্রতিবেশী চিন-সীমান্তবর্তী এলাকায়।