ঢাকা: পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি পুরোপুরি। বরং অশান্তিতে ইন্ধন প্রায় রোজই যোগ হয়ে চলেছে। জাতীয় সঙ্গীত পাল্টানোর দাবিও উঠতে শুরু করেছে বাংলাদেশে। সেই নিয়ে এবার মুখ খুলল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান, নোবেলজয়ী মুহম্মদ ইউনূসের সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশে বিতর্কের কোনও জায়গা নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। (Bangladesh National Anthem)


জাতীয় সঙ্গীত বদলের দাবি নিয়ে সরকারের অবস্থান জানিয়েছেন ইউনূসের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা এএফএম খালিদ হোসেন। শনিবার তিনি বলেন, "জাতীয় সঙ্গীত পাল্টানো নিয়ে কিছু ভাবছে না। এগুলো আসলে বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস। বিতর্ক হয়, এমন কিছুই করবে না অন্তর্বর্তকালীন সরকার।" (Amar Shonar Bangla)


হোসেন জানিয়েছেন, দেশে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনা, রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনাই তাঁদের লক্ষ্য। নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজিয়ে, সুষ্ঠ নির্বাচন করাতে হবে দেশে, যাতে সুষ্ঠ ভাবে নির্বাচিত দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা সম্ভব হয়। মন্দির, মসজিদ, মাজার ভাঙার তীব্র নিন্দাও করেন তিনি। বরং সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখতে অনুরোধ জানান সকলকে।


সাম্প্রতিক অশান্তির পর বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু তাদের অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলেছে জামায়াতে ইসলামের প্রাক্তন আমির গুলাম আজমের ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আজমি। রবীন্দ্রনাথের লেখা 'আমার সোনার বাংলা' গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত রাখার বিরোধিতা করেন তিনি। জাতীয় সঙ্গীত বদলের দাবি জানান।


'আমার সোনার বাংলা'র বিরোধিতা করে আমান বলেন, "জাতীয় সঙ্গীতের বিষয়টি  সরকারের হাতেই ছেড়ে দিলাম। কিন্তু বর্তমানের জাতীয় সঙ্গীতটি স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্বের পরিপন্থী। এতে বাংলাভাগ এবং দুই বাংলার ঐক্যই প্রতিফলিত হয়। দুই বাংলার একত্রীকরণের উদ্দেশে বাঁধা গান কী করে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হয়? ১৯৭১ সালে জাতীয় সঙ্গীতটিকে আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। আরও অনেক গান রয়েছে জাতীয় সঙ্গীত হওয়ার জন্য। কমিটি গড়ে নয়া জাতীয় সঙ্গীত বাছাই করা উচিত সরকারের।" এমনকি মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি। দাবি জানান, সংবিধান সংশোধনেরও।


কিন্তু বাংলাদেশের নাগরিকদের বড় অংশ আমানের এই দাবিতে আপত্তি জানিয়েছেন। দেশের সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতীয় সঙ্গীতকে কটাক্ষ করায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্ট জনেরাও। বাংলাদেশের কিছু নাগরিকের তরফে একটি বিবৃতিও জারি করা হয়।  মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতীয় সঙ্গীতের মতো বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করে একটি গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে চাইছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে তাতে। জামায়তের মন্তব্যবে ধৃষ্টতা বলেও উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি, দেশ জুড়ে একই সময়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার কর্মসূচিও পালিত হয়েছে। একই সময় উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকার।