ঢাকা: সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার একের পর এক ঘটনা সামনে আসছে। আন্তর্জাতিক মহলেও সেই নিয়ে সমালোচনা শুনতে হচ্ছে। দেশে ইসলামি কট্টরপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সর্বত্র। কিন্তু সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। তাঁর দাবি, বাংলাদেশে পায়ের নীচে মাটিই পাবে না ইসলামি কট্টরপন্থীরা। পাশাপাশি, ইউনূস জানিয়েছেন, বাংলাদেশে নির্বাচন হলেই নিজের পুরনো জীবনে, নিজের কাজে ফিরে যাবেন তিনি।  (Muhammad Yunus)


আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম 'দ্য ইকনমিস্ট'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেছেন ইউনূস। সম্প্রতি 'দ্য ইকনমিস্ট' বাংলাদেশকে Country of the Year 2024 ঘোষণা করে। গত এক বছরে বাংলাদেশে বড় পরিবর্তন ঘটেছে বলে জানায় তারা। সেখানেই বাংলাদেশকে ঘিরে উদ্বেগ-আশঙ্কার জবাব দিলেন তিনি। (Bangladesh News)


হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে বিভিন্ন মহল আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশও ইসলামি কট্টরপন্থীদের আখড়া হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা আমেরিকা এবং ভারতের মতো দেশের। সেই নিয়ে প্রশ্ন করলে ইউনূস বলেন, "আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, এমনটা হবে না। আমাদের যুবসমাজ খুবই উদ্যমী। ধর্ম নিয়ে তাদের অবস্থান নিরপেক্ষ। ওরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। যুবসমাজই পারে পৃথিবীতে বদল আনতে।"


সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন থেকেই বাংলাদেশে গণবিপ্লব মাথাচাড়া দেয়। বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ইউনূসের দাবি, সেই ঝড়ঝাপটা কাটিয়ে নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে দেশের যুবসমাজ। বিশেষ করে মেয়েদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। ইউনূসের কথায়, "যুবসমাজ কতটা শক্তিশালী, বাংলাদেশই তার উদাহরণ। যুবসমাজকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। বিশেষ করে মেয়েদের। বাংলাদেশের বিপ্লবে অল্পবয়সি মেয়েদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।"


অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের শাসনভার নিজের হাতে রাখলেও, ইউনূস জানিয়েছেন, নির্বাচনের পর তিনি আবারও নিজের জায়গায় ফিরে যাবেন। ইউনূসের বক্তব্য, "আমাকে আমার কাজ থেকে জোর করে সরিয়ে আনা হয়েছে। আমি আমার যে কাজ করছিলাম, তা উপভোগ করতাম। সেই কারণে প্যারিসে ছিলাম। অন্য কিছু করার জন্য প্যারিস থেকে আনা হয় আমাকে। আমি আমার কাজে আবার ফিরে যাব। আগের মতো উপভোগ করব জীবনকে।" ২০২৫ সালের শেষে বা ২০২৬ সালের শুরুতে বাংলাদেশে নির্বাচন করানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইউনূস সরকারের। সেই নির্বাচন মিটে গেলেই নিজের পুরনো জীবনে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন ইউনূস।