কলকাতা: লাগাতার আন্দোলনের জেরে, প্রধানমন্ত্রিত্ব এবং দেশ দু'টোই ছাড়তে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। কিনতু, টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা সরকারের বিরুদ্ধে এই পরিমাণ রাগ জমেছিল কেন? অনেকে বলছেন, পরপর নির্বাচনে ব্য়াপক কারচুপির অভিযোগ, ব্য়াঙ্কে দুর্নীতি, ঋণ খেলাপির পরিমাণ বৃদ্ধি হাসিনার সরকারকে বড়সড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছিল। তার মধ্য়ে ছাত্র আন্দোলনের প্রতি হাসিনার সরকারের মনোভাব ক্ষোভের বাঁধ ভেঙে দেয়। 


এই পরিমাণ রাগ জমেছিল কেন?


ভারতের স্বাধীনতার বছর ১৯৪৭ সালে তাঁর জন্ম। তাঁর বাবা শেখ মুজিবর রহমান ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্য়তম রূপকার। কিন্তু অভিযোগ, সেই শেখ হাসিনার আমলেই নাগরিক স্বাধীনতার ওপর বারবার নেমে এসেছে কোপ। খর্ব হয়েছে নির্বাচনের যোগ দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকারও। এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে আন্দোলন দাবানলের আকার নিয়েছে তা জমে থাকা পুঞ্জীভূত ক্ষোভ বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।

বাংলাদেশে একটানা ২০০৯ থেকে ২০২৪, ১৫ বছর রাজত্ব করেছেন শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে প্রথম যে নির্বাচনে জিতে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসেন, তাতে বিপুল জনমত গেছিল তাঁর দিকে। অভিযোগ, এরপর থেকে আর কোনও নির্বাচন অবাধ হওয়ার সুযোগ পায়নি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের নির্বাচন বয়কট করেছিল খালেদা জিয়ার BNP এবং তাদের জামাত-ই-ইসলামি। ফলে অর্ধেকের বেশি আসনে ভোটই হয়নি। জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৪ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।ল২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়েও ব্য়াপক কারচুপির অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। BNP-র মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, ভোটের আগের রাতেই ব্য়ালট পেপারে ছাপ মেরে দেওয়া হয়। ভোটের আগেই ঠিক হয়ে গেছিল ফল কী হতে চলেছে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পুলিশকেও এই কাজে লাগানো হয় বলে অভিযোগ তোলে BNP। ২০২৪ সালে ভোটের আগেও BNP-র শীর্ষস্তরের বহু নেতাকে গ্রেফতার করে হাসিনা সরকারের পুলিশ। এই প্রেক্ষাপটে ২০২৪-এর জানুয়ারির সংসদীয় নির্বাচনও বয়কট করে খালেদা জিয়ার দল BNP ও তাদের সহযোগী জামাত-ই-ইসলামি। ফলে ভোটে জিততে শেখ হাসিনার কোনও সমস্য়াই হয়নি।

ডিজিটাল সিকিওরিটি আইন এনে কণ্ঠরোধের চেষ্টা, ব্য়াঙ্কে একাধিক দুর্নীতি, ঋণ খেলাপির সংখ্য়া বৃদ্ধি, অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ৯৬৫ কোটি থেকে বেড়ে ১ হাজার ৬৪৯ কোটি হওয়া, আর্থিক অসাম্য়ের বাড়বাড়ন্তেও বারবার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে হাসিনা সরকার। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ। বাংলাদেশে হাসিনা-জমানা আপাতত অতীত। কিন্তু তারপর বাংলাদেশে যে নৈরাজ্য় চলছে, তার দায় কে নেবে?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: Bangaldesh Update: ওপার বাংলায় অশান্তি, কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসে বাড়ল নিরাপত্তা