রুমা পাল, কলকাতা: বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়নের (Bangladesh Violence) প্রতিবাদে ফের পথে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) সমর্থকরা। কেষ্টপুরে বিক্ষোভ দেখান লাল হলুদ সমর্থকরা। প্ল্যাকার্ড ও লাল হলুদ বেলুন হাতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন। কেষ্টপুর বাঙাল নামে লাল হলুদের ফ্যানস ক্লাবের সমর্থকরা জমা হন কেষ্টপুর বাসস্ট্যান্ডে।
ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের পূ্র্বপুরুষদের অনেকেরই শিকড় ওপার বাংলায়। অনেকেই অতীতে ভিটেমাটি ছেড়ে এদেশে এসেছেন। সেই ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে, সেই অনুরোধ লাল হলুদ সমর্থকদের। তাঁদের অনেকেরই হাতে রয়েছে প্ল্যাকার্ড, বার্তা একটাই শান্তি চাই। কোনও প্ল্যাকার্ডে লেখা, 'সংখ্যালঘুদের ন্যায়বিচার চাই', আবার কোনটায় 'হত্যা নয়, উচ্ছেদ নয়, লক্ষ্য় শুধু সমৃদ্ধির দীপ্ত সমন্বয়'। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা মৌন প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন।
প্রতিবাদে সামিল এক সমর্থক বলেন, 'বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি আমরা সবাই জানি। আমরা চাই যে শান্তি ফিরুক। অতীত ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে।' আরেক সমর্থকের মুখে শোনা গেল ইতিহাসের স্মৃতিচারণ। 'আমাদের পরিবার ১৯৫০ সালে এপারে চলে এসেছিলাম। ঠাকুরদা, ঠাকুমাদের কাছ থেকে সেই সময় যা যা ঘটেছিল, সেইসব শুনেছি। বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে তো সেই ভয়, আতঙ্কের কথা আবার মনে পড়ে যাচ্ছে। তাইজন্য আমাদের এই প্রতিবাদ।'
এর আগে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফে বাংলাদেশে নিরন্তর সংখ্যালঘুদের ওপর যে অত্যাচারের ঘটনা ঘটছে, সেই নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। ময়দানের প্রথম ক্লাব হিসাবে তারা এই প্রতিবাদ জানায়। শুধু তাই নয়, ওপার বাংলায় শান্তি ফেরানোর অনুরোধে যাতে কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ নেয়, সেইজন্য প্রধানমন্ত্রীকে শুক্রবার চিঠিও দেয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এবার পথে ক্লাবের সমর্থকেরাও।
বাংলাদেশের এই অরাজকতা নিয়ে কিন্তু মুখ খুলেছেন শেখ হাসিনাও। তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'আমাদের আওয়ামি লিগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীকে হত্যা করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের হত্যা করা হয়েছে। বাড়িঘর লুঠপাট, মন্দির, দরগা-শরিফ, মন্দির, গির্জা ধ্বংস করা হয়েছে। মানুষের কথা বলার অধিকার আর নেই। ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নেই। মৌলিক অধিকার থেকে মানুষ বঞ্চিত, এইটাই হচ্ছে সবথেকে দুঃখের। আজকে যখন বাংলাদেশ অত্যন্ত একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, একটা ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার সবই হরণ করা হয়েছে। সারা বাংলাদেশ জ্বলছে।'
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি ইস্টবেঙ্গলের