চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে জেলবন্দি করে রাখার ছক বাংলাদেশের। একমাস পিছিয়ে গেল ইসকনের সন্ন্যাসীর জামিন-মামলার শুনানি।সূত্রের খবর, আগামী বছরের ২ জানুয়ারি চিন্ময়কৃষ্ণর জামিন-মামলার শুনানি হতে পারে। সন্ত্রাসের ভয়ে কোনও আইনজীবী লড়তে পারলেন না চিন্ময়কৃষ্ণর হয়ে। কারণ একটাই সন্ত্রাস, হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন।
কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস বলেন, ৫১ জনের বেশি আইনজীবী যাঁরা তাঁর হয়ে লড়াই করছেন, সবার বিরুদ্ধে পুলিশ কেস করা হয়েছে। সবার বাড়ি ঘর ভাঙা হয়েছে। আর ওদের মধ্যে অনেকে লুকিয়ে রয়েছে। কারণ ওরাও আতঙ্কে রয়েছে। ২৫ নভেম্বর সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পুলিশ। ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে পেশ করার পর তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়।
এর ১ সপ্তাহ পর মঙ্গলবার ফের তাঁর জামিন মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তাঁর হয়ে কোনও আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকতে পারায় আরও ১ মাস জেলে থাকতে হবে সন্ন্য়াসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে আর এই ঘটনাই শান্তি-সম্প্রীতি-মানবাধিকারের হয়ে সওয়াল করে নোবেল পুরস্কার পাওয়া মহম্মদ ইউনূসের আসল চেহারা গোটা বিশ্বের সামনে উন্মোচিত করে দিল। যে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের হয়ে গত সপ্তাহে ৫০ জনেরও বেশি আইনজীবী আদালতে হাজির হয়েছিল, সেখানে মঙ্গলবার কাউকে দেখা গেল না! কারণ একটাই সন্ত্রাস, হুমকি, ভীতি প্রদর্শন। সোমবার চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী রমেন রায়ের ওপর ভয়াবহ হামলা হয়।
চিন্ময়কৃষ্ণের আরেক আইনজীবী রিগন আচার্যর চেম্বারেও হামলা চালানো হয়। ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয় সব। আর তারপর আদালত চত্ত্বরে কট্টরপন্থী আইনজীবীদের প্রকাশ্য়ে এই হুমকি। বাংলাদেশের বিক্ষোভকারী চিন্ময়কৃষ্ণ বিরোধী আইনজীবী বলেন, ইসকনের, এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা এই চিন্ময় দাসকে যতদিন পর্যন্ত হত্যা মামলায় আসামি করা হবে না, আইনজীবীদের আন্দোলন ততদিন চলবে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় যদি কেউ সাহস করে এই চিন্ময় দাসের পক্ষে এবং চিন্ময় দাসের তোষণের পক্ষে কেউ যদি ওকালতি করতে চায়, কিংবা ওকালতনামা দাখিল করে, সাথে সাথে এই বিল্ডিংয়ে তাকে গণপিটুনি দিতে হবে।
এরপর কি আদৌ বলা যায় বাংলাদেশে আইনের শাসন আছে?
সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে আরও যে আইনজীবীরা সন্ন্য়াসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের হয়ে আদালতে হাজির ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। এই আবহেই তাঁরা মঙ্গলবার আদালতে আসার সাহস পাননি। ইসকন সূত্রে খবর, আতঙ্কে আত্মগোপন করেছেন অনেক আইনজীবী।
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের তরফে কড়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের হয়ে কোনও আইনজীবীকে দাঁড়াতে না দেওয়ার তীব্র নিন্দা করছি আমরা। সরকার কী চাইছে? এটা কি স্বাধীন বিচারব্য়বস্থার নমুনা? এটা যদি চলতে থাকে তাহলে বাংলাদেশে সনাতনী সহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? যে ৭০জন আইনজীবী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের হয়ে উপস্থিত ছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে, হুমকি দেওয়া হয়েছে। যা আইনের শাসন ও মানবাধিকারের পরিপন্থী।
সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেফতারি এবং বাংলাদেশে হিন্দুদের পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে গভীর উদ্বেগ্ন প্রকাশ করেছে ভারত। কিন্তু ইউনূস সরকারের অনৈতিক-বেআইনি কাজ চলছেই।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে