তুহিন অধিকারী, বিষ্ণপুর (বাঁকুড়া) : বিভিন্ন পরীক্ষায় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ। রেট চার্ট দেখে "চক্ষু চড়কগাছ" বাঁকুড়ার বিষ্ণপুরের মহকুমা শাসকের। ঘটনায় বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জরুরি তলব।


বিভিন্ন পরীক্ষার নাম করে রোগী ও রোগীর আত্মীদের কাছ থেকে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগ ওঠে বিষ্ণুপুর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে ওই হাসপাতালে আচকমকা পরিদর্শনে যান বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক। সেখানে রেট নজরে আসতেই "চক্ষু চড়ক গাছ" হওয়ার উপক্রম হয়ে ওঠে তাঁর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে জরুরি তলব করেন তিনি। তাহলে কি এই রেট দেখেই নেওয়া হচ্ছিল অতিরিক্ত টাকা ? এরকম প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। 


একের পর এক ভুয়োকাণ্ডে শোরগোল পড়েছে রাজ্যজুড়ে। ভ্যাকসিন কাণ্ড থেকে শুরু হয়ে এই রাজ্যে একের পর এক ভুয়ো আধিকারিকের খোঁজ মিলেছে। সম্প্রতি বাঁকুড়া জেলাতেও স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড নিয়ে ভুয়ো চিকিৎসার অভিযোগ সামনে এসেছে বেসরকারি কয়েকটি হাসপাতলের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই ওই বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। সামনে এসেছে লাইসেন্সহীন নার্সিংহোম চালানোর অভিযোগও। সেই নার্সিংহোম ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে। 


এবার সামনে এল বিষ্ণপুর শহরের মটুকগঞ্জ এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পরীক্ষায় বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ। ওই হাসপাতালের হেল্প ডেস্কে টাঙানো রেট চার্ট প্রশাসনিক নির্দেশের বাইরে বলে মনে করা হচ্ছে। তাহলে কি এই রেট তালিকা ভুয়ো ? এই ভুয়ো তালিকা ধরেই কি নেওয়া হচ্ছিল রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে বেশি টাকা? বিষ্ণুপুর মহকুমা শাসকের কাছে ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে পরীক্ষার নাম করে বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ সামনে সামনে আসে। খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ হাসপাতালে আচমকা হানা দেন মহকুমা শাসক অনুপ কুমার দত্ত। যান বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরাও। হাসপাতালে টাঙানো রেট তালিকায় দেখেন পালস অক্সিমিটারের এক ঘণ্টায় ভাড়া ৫০০ টাকা। যা দেখে যে কোনও মানুষের চোখ কপালে ওঠায় স্বাভাবিক। বিভিন্ন রেট খতিয়ে দেখেন মহকুমা শাসক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। রেট নিয়ে গরমিল রয়েছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। 


পরে মহকুমা শাসক জানান, অভিযোগ পেয়ে খতিয়ে দেখতে এসেছিলাম। রেট এবং প্যাকেজ কী হিসেবে ওই হাসপাতাল নিচ্ছে তা জানার জন্য জরুরি তলব করা হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।   


এদিকে অভিযোগ সামনে আসতেই অন্য কথা বলছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, ফর্ম্যালিটির জন্য টাঙানো হয়েছে। এই রেট ধরে টাকা নেওয়া হয় না।


যদিও এই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীর আত্মীয়দের একাংশের দাবি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে।