পুর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: নিম্ন চাপের জেরে গত সপ্তাহে বাঁকুড়া জেলা জুড়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিতে শাকসব্জি চাষের ব্যাপর ক্ষতি হয়েছে। ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকরা। এবার ক্রেতাদের পকেটেও টান পড়েছে।
বৃষ্টিতে সব্জি চাষে ক্ষতির প্রভাব এবার পড়তে শুরু করল জেলার সব্জি বাজারে। ভারি বৃষ্টিতে জেলার সবজি চাষ ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় প্রতিটি বাজারে সব্জির দাম বেড়েছে আড়াই থেকে তিন গুণ। সব্জির এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতিতে একদিকে যেমন জেলার সব্জি কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে তেমনই অত্যধিক দাম বৃদ্ধিতে রীতিমত হাত পুড়ছে মধ্যবিত্ত জেলাবাসীর।
বাঁকুড়া জেলায় গত দশ বছরে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের গড় হার ১৪০ সেন্টিমিটার। কিন্তু চলতি বছর বর্ষার শুরুতেই গত সপ্তাহের তিন চার দিনে নিম্নচাপের জেরে বাঁকুড়া জেলায় মোট বৃষ্টি হয় প্রায় ৩৯ সেন্টিমিটার। অল্প সময়ের মধ্যে এই ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির জেরে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার সব্জি চাষ। কৃষি দফতরের হিসাব অনুযায়ী বাঁকুড়া জেলায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন ও সাত হাজার হেক্টর জমিতে বর্ষাকালীন সব্জির চাষ হয়। গ্রীষ্ম কালীন সব্জি মাঠে থাকতেই প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে বর্ষাকালীন সব্জি লাগানো হয়ে গিয়েছিল। সেই সময়ই একেবারে পাকা ধানে মই দিয়ে যায় নিম্নচাপের বৃষ্টি। কৃষি দফতরের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী বাঁকুড়া জেলায় ৭০ শতাংশ জমির গ্রীষ্মকালীন সব্জি ও ২৫ শতাংশ জমির বর্ষাকালীন সব্জি নষ্ট হয়ে গেছে। সব্জির এই ভরা মরসুমে বিপুল এই ক্ষতির জেরে মাথায় হাত পড়েছে জেলার সব্জি চাষীদের। বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করা সব্জি কৃষকরা এখন নিজেদের ঋণ কিভাবে পরিশোধ করবেন তা ভেবেই দিশাহারা ।
কৃষি দফতরের দাবি, সব্জি চাষে এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতির প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে জেলার সব্জি বাজারগুলিতে। প্রতিটি সব্জিরই আড়াই থেকে তিনগুণ দাম বেড়েছে। যে সব কৃষকদের ফসল বীমার আওতায় ছিল তারা নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাবেন। ইতিমধ্যেই সেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।