সুনীত হালদার, হাওড়া: সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য এবার ভাড়ায় পাওয়া যাবে হাওড়ার আস্ত রেল মিউজিয়াম। পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম সুমিত নারুলা জানিয়েছেন, রেলের আয় বাড়ানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু যেখানে রয়েছে ভারতীয় রেলের ইতিহাস, সেখানে কী করে এমন অনুষ্ঠান সম্ভব? প্রশ্ন তুলে সমালোচনায় সরব রাজ্যের মন্ত্রী।


চাইলে ট্রেনেই হতে পারে ডেস্টিনেশন ম্যারেজ। পকেট পারমিট করলে ভাড়া নেওয়া যেতে পারে ট্রেনের বিলাসবহুল স্যুইট। আয় বাড়াতে আগেই এসব রাস্তায় হেঁটেছে ভারতীয় রেল। কিন্তু সব ওলটপালট করে দিয়েছে করোনা আবহ।  বন্ধ ট্রেন, বন্ধ আয়ের রাস্তা। এই পরিস্থিতিতে এবার সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য হাওড়া স্টেশন লাগোয়া রেল মিউজিয়াম ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত পূর্ব রেলের।


পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম সুমিত নারুলা জানিয়েছেন, রেলের আয় বাড়ানোর জন্য জন্মদিন এবং অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য রেল মিউজিয়ামকে এবার ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কিছুদিন আগে দরপত্র ডাকা হয়। সেই দরপত্রে বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক সংস্থা সাড়াও দেয়। সন্ধের সময় মিউজিয়ামের মধ্যে যে বাগান আছে তাতে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।


হাওড়ায় রেলের এই মিউজিয়ামে রয়েছে, বিভিন্ন মডেলের পুরানো স্টিম ইঞ্জিন, পুরনো মডেলের কোচ, সিগন্যালিং সিস্টেম, চাকা ও লাইনের যন্ত্রাংশ এবং ট্রেনের দুষ্প্রাপ্য ছবি। মিউজিয়ামের  মূল অংশে রয়েছে মিনি হাওড়া স্টেশন, রেলের যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন স্থাপত্য এবং আস্ত টয় ট্রেন। সামাজিক অনুষ্ঠান হলে এসবের ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা মন্ত্রী থেকে সাধারণ মানুষের।  রেলের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।


সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়ের বলেন, এই সরকার বেচারাম সরকার, সবকিছুই বেচতে চায়। যেভাবে রেল সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দিচ্ছে , তা লজ্জার। মিউজিয়ামে কখনো সামাজিক অনুষ্ঠান হতে পারে না। রেলের কি এমন অর্থের প্রয়োজন হল যাতে কিনা মিউজিয়ামকে ভাড়া দিতে হয়? এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাবেন বলে জানান।


২০০১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই মিউজিয়ামটি তৈরি করা হয়। সারা বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য দর্শক এই মিউজিয়াম দেখতে আসেন। ভারতীয় রেলের বিবর্তন জানতে এই মিউজিয়াম পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। করোনা আবহে অবশ্য দরজা বন্ধ মিউজিয়ামের।