আবীর দত্ত, কলকাতা: বরানগরের ইন্ডাসিন্ড ব্যাঙ্কের শাখায় ইএমআই বাকি পড়ায় ঋণগ্রহীতা যুবককে মারধরের অভিযোগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটে অভিযোগ করেছেন ওই যুবক। যদিও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই যুবককে মারধর করা হয়নি।
ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে, শুধু উর্দি পরা নিরাপত্তারক্ষীই নয়, সাধারণ পোশাকেও কয়েকজনকে দেখা যাচ্ছে চড়াও হতে। ধাক্কা দিতে দিতে বের করে দেওয়া হয় যুবককে। ভাইরাল এই ভিডিও কোনও স্ট্রিট ফাইট নয়, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ভিতরের ঘটনা।
প্রথম দফায় লকডাউনের সময় চাকরি হারানো এক যুবকের অভিযোগ, স্কুটার কেনার জন্য নেওয়া ঋণের ইএমআই বাদ পড়ায় তাঁকে এইভাবে মারধর করা হয়েছে বরানগরের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে। ব্যাঙ্কের ঋণখেলাপী বিজয় মালিয়া ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে এখন লন্ডনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে ঋণখেলাপী মেহুল চোকসি মামলা লড়ছেন ডমিনিকায়। ৭৪ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ৩৩ হাজার টাকা শোধ করার পর ব্যাঙ্কে এই অভিজ্ঞতা হল বিধাননগরের বাসিন্দা বিপুল সাহুর।
গতবছর প্রথম লকডাউনের সময় কাজ হারিয়েছিলেন বিপুল। অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেলে যাতায়াতে সুবিধা হবে বলে তিনি বরানগরের ইন্ডাসিন্ড ব্যাঙ্ক থেকে স্কুটার কেনার জন্য ৭৪ হাজার টাকা ঋণ নেন। যুবকের দাবি, সেই ঋণের ৩৩ হাজার টাকা তিনি ইতিমধ্যে শোধ করেছেন। ২ হাজার ৮০০ টাকা করে ৩৫টি ইএমআই-এর মধ্যে ১১টি ইএমআই তিনি দিয়েছেন বলে যুবকের দাবি। তাঁকে মরিটরিয়মের সুযোগ না দিয়ে বাড়তি ইএমআই কেটে নেওয়া হয়েছিল। ব্যাঙ্ক তাঁকে ডেকে পাঠায়। বুধবার সকালে ব্যাঙ্কে যাওয়ার পরই এই ঘটনা বলে অভিযোগ।
অভিযোগকারী বিপুল সাহু বলেন, ব্যাঙ্কে যেতেই আমাকে মারধর করা হয়। বরানগর থানার পুলিশ এলেও আমার অভিযোগ নেয়নি। লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম, চাকরি নেই, ঋণ শোধের বড়তি সময় পাওয়ার কথা। যদিও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই যুবককে মারধর করা হয়নি। ইন্ডাসিন্ড ব্যাঙ্ক, বরানগর শাখার ম্যানেজারের কথায়, ছেলেটি এসে হম্বিতম্বি শুরু করে। মোবাইল নিয়ে ভিডিও করতে শুরু করে। ওকে মারধর করা হয়নি। ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।
বরানগর থানার পুলিশ সূত্রে দাবি, দু’পক্ষই পুলিশের কাছে এলেও লিখিতভাবে জানিয়েছে, একে অপরের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে। বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর কমিশনারেটে ইমেল করে অভিযোগ জানিয়েছেন বিপুল সাহু।