অমৃতসর: স্বাধীনতার (Independence) ৭৫ বছর! প্রত্যেক বারের মতো এবারও বিশেষ মর্যাদায় আটারি-ওয়াঘা (Attari-Wagah) সীমান্তে (Border) পালিত হচ্ছে বিটিং রিট্রিট (Beating Retreat)। বিশেষ এই অনুষ্ঠানে উপলক্ষ্যে মেতে ওঠে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (Armed Forces)। সূর্যাস্তের (sunset) সঙ্গে সীমান্তে দু-তরফের লৌহদরজাই খুলে যায়। ধীরে ধীরে দুটি দেশের পতাকা নামানো হয়। তার পর দুটি পতাকা ভাঁজ করা হয়। এর পর রিট্রিট অনুষ্ঠান। দু-তরফের সেনাবাহিনী একে অন্যের সঙ্গে করমর্দন করে। ফের লৌহদরজা বন্ধ হয়ে যায়। ভারতের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে বিশেষ ভাবে এই অনুষ্ঠান উদযাপনের ব্যবস্থা ছিল সোমবার।
বিটিং রিট্রিটের ইতিহাস...
কিন্তু কোথা থেকে এল 'বিটিং রিট্রিট'-র ঐতিহ্য? এর জন্য ফিরে যেতে হবে সতেরো শতকের ইংল্য়ান্ডে। রাজা দ্বিতীয় জেমস নিজের সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিলেন, জোরে জোরে ড্রাম বাজাতে হবে। সঙ্গে জারি হল পতাকা নমিত রাখা ও কুচকাওয়াজের নির্দেশও। যুদ্ধশেষের ঘোষণা করতেই এই ব্যবস্থা। অনুষ্ঠানটি সূর্যাস্তের সময় হত। তবে সব কিছুর আগে এক রাউন্ড ফায়ারিং ছিল বাধ্যতামূলক। এর পর ধীরে ধীরে ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, নিউ জিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের সশস্ত্রবাহিনীতেও এই অনুষ্ঠান চালু হয়।
ভারতে কী ভাবে?
প্রতিরক্ষামন্ত্রকের প্রেস রিলিজ অনুযায়ী, ভারতের সশস্ত্রবাহিনীতে এই বিশেষ অনুষ্ঠানের শুরু পঞ্চাশের দশকের গোড়ায়। সেনাবাহিনীর মেজর রবাটর্স এই স্বতন্ত্র অনুষ্ঠানটি শুরু করেন। সাধারণ ভাবে সামরিক ইতিহাসের নিরিখে সূর্যাস্তের সময় যখন কোনও দেশের সেনাবাহিনী যুদ্ধ শেষে রণক্ষেত্র থেকে শিবিরে ফেরে, সেই সময়ের অনুষ্ঠান এটি। রিট্রিট শুনে ফিরে আসাই দস্তুর এই অনুষ্ঠানের। আসলে ফেলে আসা সময়ের নস্টালজিয়া তৈরি করাই মূল উদ্দেশ্য এই অনুষ্ঠানের। এখানে মূল অনুষ্ঠানটির মেয়াদ ১৫৬ সেকেন্ড।
গত বছর কী হয়েছিল?
সেনার ১৫টি ব্যান্জ, ১৫টি পাইপ ও ড্রাম ব্যান্ড গত বার ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। নৌসেনা, বায়ুসেনা, রাজ্য পুলিশ, সিএপিএফ, সিআইএসএফ, সিআরপিএফ এবং দিল্লি পুলিশও যোগ দিয়েছিল এতে। ব্যান্ডের তরফে বেশ কিছু মিউজিকাল পারফরম্যান্স করা হয়। এই বছরও উৎসবের ভরপুর মেজাজ। বিশেষ অনুষ্ঠানও দেখা গেল আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে।
সব মিলিয়ে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে সেজে উঠল সীমান্ত, উদযাপনের মেজাজ নিরাপত্তাবাহিনীর মধ্যে।
আরও পড়ুন:'জীবনে অনৈতিক কাজ করিনি, প্রমাণ হলে নিজেকে মৃত্যুদণ্ড দেব', বললেন ফিরহাদ