বেজিং: প্রায় দেড় শতকের ইতিহাসে এই প্রথম। আর তাতেই নাস্তানাবুদ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। বন্যার কবলে কার্যত হোঁচট খেয়েছে চিনের রাজধানী বেজিং। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে সূত্রেরই খবর, অতি ভারী বৃষ্টির কারণে হওয়ার বন্যা পরিস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক বাড়ি ইতিমধ্যেই ডুবে গিয়েছে। বহু রাস্তা উপড়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত অন্তত ২০ জনের মৃত্য়ুর খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রায় তিরিশ জনের কাছাকাছি বাসিন্দা নিখোঁজ।
বেজিংয়ের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে রয়েছে ZhouZhou শহর, যা এখন বন্যার কারণে জলের তলায়। সেখানে উদ্ধারকাজ চালাতে বুধবারই ওই শহরে বহু সংখ্যায় উদ্ধারকর্মী পাঠিয়েছে চিনের প্রশাসন। টাইফুনের প্রভাবেই সেখানে চলছে এমন বৃষ্টি। হেবেই প্রদেশে থাকা ZhouZhou-এ গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝড়ে ধাক্কা লেগেছে। ওই শহরের পাশেই রয়েছে বেজিং, সেই শহরেই গত ১৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতি ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে। শহরের মোট জনসংখ্যার বিশাল একটি অংশকে সরিয়ে মিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই এলাকায় একাধিক নদী এসে মিশেছে। ফলে ভারী বৃষ্টির কারণে জলের তোড় এসে ধাক্কা দিয়েছে এই এলাকায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু মানুষ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, অন্তত সাড়ে ছশো হেক্টরের কৃষিজমি জলের তলায় গিয়েছে।
বেজিংয়ের অবস্থাও তথৈবচ। বৃষ্টির কারণে ট্রেন স্টেশন বন্ধ করা হয়েছে। বিপজ্জনক এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ এলাকায়। জলের তোড়ে রাস্তায় থাকা গাড়িও ভেসে গিয়েছিল। বেজিংয়ে সাধারণত এত বৃষ্টিপাত দেখা যায় না। এখানে সাধারণত মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। কিন্তু এবার রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টি হয়েছে এখানে। এই মরসুমে বেজিংয়ে অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশিদিন ধরে গরমও দেখা গিয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতির কথা বিচার করেই চিনের প্রেসিডেন্ট সব প্রাদেশিক প্রশাসনকে পুরোদমে উদ্ধারকাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগেও একাধিক বন্যার ঘটনা ঘটেছে চিনের নানা প্রান্তে। জুলাইয়ের একেবারে প্রথম দিকে দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে বন্যার কারণে প্রাণ গিয়েছিল জনা পনেরো লোকের। মধ্য চিনের একটি অঞ্চলেও বন্যা হয়েছিল। সাম্প্রতিক ইতিহাসের মধ্যে ১৯৯৮ সালে ধ্বংসাত্মক বন্যা হয়েছিল চিনে। সেই ঘটনায় প্রায় ৫ হাজার লোকের প্রাণ গিয়েছিল। ২০২১ সালেও হেনান প্রদেশে অন্তত ৩০০ লোকের প্রাণের কেড়েছিল বন্যা।