সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: নিয়োগে কি অনিয়ম ছিল? যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কি কাউকে চাকরি দেওয়া হয়েছে? তা জানতে ২০১৪-র প্রাথমিকের টেটের ভিত্তিতে নিয়োগ তালিকা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতে ফের টেট-অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার।


মামলাকারী স্বদেশ দাস আদালতকে জানিয়েছেন, ২০১৪-র প্রাথমিকের টেটে পাস করে ২০১৭-তে চাকরি পান তিনি। কিন্তু তিনদিন ক্লাস করানোর পরই তাঁকে জানানো হয়, তাঁর নিয়োগ বৈধভাবে হয়নি। জানানো হয়, তাঁর যোগ্যতা সংক্রান্ত কোনও নথিও সরকারের কাছে নেই। ফলে চাকরি যায় উত্তরবঙ্গের ওই বাসিন্দার।


এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন স্বদেশ দাস। প্রথমে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। মামলাকারী আদালতকে জানান, ২০১৪-র প্রাথমিকের টেটের ভিত্তিতে তাঁর মতো কারা চাকরি পেয়েছিলেন, তথ্য জানার অধিকার আইনে তা জানতে চান তিনি। জবাব মেলার পর মামলাকারী জানতে পারেন, এমন অনেকেই চাকরি পেয়েছেন, যাঁদের যোগ্যতা ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র নেই।


গত ২৭ অগাস্ট মামলাটি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পাঠান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। জনস্বার্থ মামলা হিসেবে সেটিকে গ্রহণ করার অনুরোধ জানান তিনি। তাতে সম্মতিও মেলে।


বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। সেখানেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে ২০১৪-র টেটের ভিত্তিতে নিয়োগ তালিকা ও অন্যান্য নথিপত্র জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর জমা দিতে হবে সেই নিয়োগ তালিকা ও নথিপত্র।


শিক্ষক নিয়োগ মামলায় আদালতে এর আগেও অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য সরকার। ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় ৬টি প্রশ্ন ভুল থাকার ঘটনায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। গত সপ্তাহে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় ৬টি প্রশ্ন ভুল ছিল। যাঁরা ওই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তাঁদের পুরো নম্বর দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই নম্বর দেওয়া হয়নি। সেই কারণে হেনস্থার শিকার হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। সেই কারণে মানিক ভট্টাচার্যের জরিমানা করা হচ্ছে। জরিমানা দিতে হবে মানিক ভট্টাচার্যের নিজস্ব রোজগারের টাকায়। ১৯ জন মামলাকারীর প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে দিতে হবে তাঁকে।’


আজ এই টেট নিয়েই নতুন করে অস্বস্তিতে পড়ল রাজ্য সরকার।