কলকাতা: সীমান্ত দিয়ে গরুপাচারের ঘটনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই মুহূর্তে তা নিয়ে উত্তাল এপার বাংলার রাজনীতি। গরুপাচারে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের স্নেহধন্য, বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেই আবহে গরুপাচার নিয়ে মুখ খুললেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশেই গরুপাচার হয় বলে যখন উত্তাল এপার বাংলার রাজনীতি। সেই সময় হাসিনা জানিয়ে দিলেন, গরুর জন্য ভারতের উপর নির্ভরশীল নয় বাংলাদেশ। 


সোমবার ভারত সফরে আসছেন হাসিনা। তার আগে রবিবার  সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে ফ্রি-হুইলিং টেলিভিশন বার্তালাপ হয়। করোনার সময় এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশি পড়ুয়াদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারের প্রশংসা করেন হাসিনা। করোনা টিকা সরবরাহের জন্যও মোদিকে ধন্যবাদ জানান।



সেখানেই প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন সীমান্ত দিয়ে গরুপাচারের প্রসঙ্গ উঠে আসে। গরুপাচার নিয়ে যদিও উদ্বেগ প্রকাশ করেন হাসিনার। কিন্তু গরুর জন্য ভারতের উপর বাংলাদেশ নির্ভরশীল নয় বলও জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, "গরুপাচার রোধে ভারতের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে, আরেকটু ধৈর্য ধরতে হবে। ভারতীয় গরুর উপর বাংলাদেশ খুব বেশি ভরসা করে না। সীমান্তে গরুপাচার অনেক কমেছে, তবু কিছু ঘটনা এখনও ঘটছে। উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিয়মিত কথা চলছে। গরুপাচার বন্ধ হওয়া উচিত।"


ভারতের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের কথাও উঠে আসে হাসিনার মুখে। তিনি বলেন, “১৯৭১-এর যুদ্ধে ভারতের অবদান আমরা চিরকাল মনে রাখব। এমনকি ১৯৭৫ সালেও, যখন আমার গোটা পরিবারকে হারাই, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাদের ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। আমরা পরস্পরের প্রতিবেশী। তাই এই বন্ধুত্বকে বরাবরই গুরুত্ব দিয়ে এসেছি আমি।”


আগামী কালই ভারত সফরে আসছেন হাসিনা। একাধিক বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। অতি সম্প্রতিই ভয়াবহ বন্যা দেখেছে বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে সেই নিয়েও কথা হতে পারে বলে এ দিন ইঙ্গিত দেন হাসিনা। তিনি বলেন, "আমদের দিকটি ঢালু। ভারত থেকে জল ঢুকছে। তার  ফল ভুগতে হয় বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকদের। বিশেষ করে তিস্তার জল নিয়ে ভোগান্তি। গঙ্গার জল ভাগাভাগি হয় বটে, কিন্তু আরও ৫৪টি নদী রয়েছে আমাদের। এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। অবিলম্বে সমাধান হওয়া উচিত।"