পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: নিম্নচাপের জেরে লাগাতার ভারী বৃষ্টি হয়েই চলেছে। তার জেরে এবার বাঁকুড়ায় জলের তলায় চলে গেল সেতু (Bankura Bridge Waterlogged)। শুক্রবার রাত থেকে সেতুর উপর দিয়ে জল বইছে। সেতুর উপর জলের উচ্চতা তিন থেকে চার ফুট হয়ে গিয়েছে। ফলে সেতুর উপর  দিয়ে যাতায়াত বন্ধ। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। (Bankura News)


নিম্নচাপের প্রভাবে বুধবার থেকে ভারী বর্ষণ হয়ে চলেছে বাঁকুড়ায়। একটানা বৃষ্টিতে গন্ধেশ্বরী নদীর জলস্তর বাড়তে শুরু করে।  গত কয়েক দিন ধরেই কার্যত ফুঁসছিল নদী। ক্রমশ বাড়তে থাকা জলস্তর শুক্রবার রাতে ছুঁয়ে ফেলে গন্ধেশ্বরী নদীর উপর নির্মিত, বাঁকুড়া থেকে মানকানালিকে সংযুক্ত করা সেতুকে। 


মানকানালির কাছে বাঁকুড়া-মানকানালি সড়কের উপর থাকা সেতুর উপর দিয়ে প্রবল বেগে বইতে থাকে জল। শনিবার সকাল থেকে ওই সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। বন্ধ হয়ে গিয়েছে ওই সেতুর উপর দিয়ে বাস চলাচলও। এর জেরে বাঁকুড়া সদর শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে মানকানালি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪ থেকে ১৫ টি গ্রাম।


আরও পড়ুন: Ajay River Overflow : অজয়ের ভয়াল রূপ, ভাঙল সেতু ! বিচ্ছিন্ন পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূম, দুর্ভোগ চরমে


সেতুর উপর নিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানকানালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এই গ্রামগুলির মানুষ শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, সমস্ত বিষয়েই নির্ভরশীল বাঁকুড়া সদর শহরের উপর। কিন্তু সেতু জলের তলায় চলে যাওয়ায় এখন চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাঁকুড়া শহরে যাওয়ার বিকল্প রাস্তা প্রায় ৩০ কিলোমিটার ঘুরপথ। নিতান্ত প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডুবে থাকা সেতু দিয়েই পারাপার করতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।


স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বছর দুয়েক আগে গন্ধেশ্বরীর বন্যায় সেতুর একাংশ ভেসে গেলেও পরে জেলা পরিষদ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সেই সেতু সংস্কার করা হয়েছে । কিন্তু এলাকার মানুষের দাবী মেনে উঁচু সেতু নির্মানের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন।


গত কয়েক দিন ধরেই একনাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। তবে এখনই তা থেকে নিস্তার মিলছে না। সোমবার পর্যন্ত রাজ্যে বৃষ্টি চলবে হলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সবকটি জেলাতেই। এর মধ্যেই রবিবার থেকে ফিরবে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি। উত্তরবঙ্গ জুড়ে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে। বেশি বৃষ্টি হবে দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি এবং মালদায়। মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি কমবে।