আবীর দত্ত, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পরের দিনই তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি বিভাস অধিকারীকে কলকাতায় তলব করল সিবিআই। আজই নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। গতকাল নলহাটিতে বিভাসের বাড়ি ও আশ্রমে সাড়ে ৭ ঘণ্টা ধরে অভিযান চালায় সিবিআই। একইসঙ্গে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার কাছে কলকাতায় বিভাসের ফ্ল্যাটেও চলে তল্লাশি। 


নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ইডির পর এবার সিবিআইয়ের স্ক্যানারে নলহাটির প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিভাস অধিকারী। গতকালই তাঁর বাড়ি ও বাড়ি লাগোয়া আশ্রমে সাড়ে সাত ঘণ্টার তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। দুটি মোবাইল ফোন ও কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। এদিন কলকাতায় তাঁর ফ্ল্যাটটি সিল করে দিয়েছে সিবিআই। 


প্রথমে কুন্তল ঘোষ, তারপর গোপাল দলপতির মুখে শোনা গিয়েছিল বিভাস অধিকারীর নাম! কিন্তু কে এই বিভাস অধিকারী? নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তাঁর নাম জড়াল কী করে? সূত্রের খবর, মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ ও বেসরকারি একাধিক কলেজের মালিক বিভাস অধিকারী আগে অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। 


নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি-র পর এবার বীরভূমের নলহাটিতে তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি বিভাস অধিকারীর বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। তৃণমূল নেতার আশ্রমেও হানা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এর পাশাপাশি, আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার কাছে বিভাসের কলকাতার ফ্ল্যাটেও চলছে সিবিআইয়ের তল্লাশি।


বিভাস অধিকারী ছিলেন তৃণমূলের নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি। পরে পদত্যাগ করেন। এছাড়াও, অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন বিভাস। সিবিআইয়ের দাবি, ২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ বিভাস অধিকারী। এর আগে গতবছরের অক্টোবরে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার কাছে বিভাস অধিকারীর কলকাতার ফ্ল্যাট সিল করে দেয় ইডি। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি, ওই ফ্ল্য়াটের সিল খুলে বিভাসকে নিয়ে, তল্লাশি চালান ইডি-র অফিসাররা। সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বিভাস অধিকারীর নাম শোনা গিয়েছিল কুন্তল ঘোষ ও গোপাল দলপতির মুখে।


এতকিছুর মাঝে রাতারাতি ভোল বদল করেছেন তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি বিভাস অধিকারী। যার বীরভূমের বাড়িতে, আশ্রমে এবং কলকাতার ফ্ল্যাটে একযোগে গতকাল তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। গতকালই বিভাস আচমকা বলেন, তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যাবতীয় সংসর্গ ত্যাগ করেছেন এবং আর্য ভারত নামে নতুন দল তৈরি করেছেন যা ইতিমধ্যেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন পেয়েছে। আজ সেই দলের আত্মপ্রকাশ এবং তারা আগামী যেসব নির্বাচন আসন্ন তাতে প্রার্থীও দেবেন বলে ভাবনা চিন্তা করছেন।। আচমকা এই ভোল বদল নিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডের নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।