কলকাতা: প্রশ্ন ছিল মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন নিয়ে। কিন্তু সেই ইস্যুতেই উঠে এল বঙ্গ রাজনীতির প্রেক্ষাপট...রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের এক্তিয়ার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নাম না করে ফের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে ফের প্রকাশ্যে চলে এল রাজ্য-রাজভবনের সংঘাত!
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার নির্বাচিত। কিন্তু, কিছু কিছু মনোনীত ব্যক্তি সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে চাইছেন। কখনও কখনও কেন্দ্রের এক্তিয়ারও টপকে যাচ্ছে।  কেন্দ্রের উচিত এটা দেখা।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃহস্পতিবারই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় বঙ্গের দুই জনপদ, যা ঘিরে একসময় তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য, সেই সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি সিঙ্গুরে গিয়েছিলাম। আমি কালেক্টরকে বলে গিয়েছিলাম। ফের সিঙ্গুর যেতে চাই, নন্দীগ্রামেও যেতে চাই। যেটাকে আড়াল করার চেষ্টা করা হবে, সেটাকেই লোক বেশি দেখতে চায়।
গত ১১ নভেম্বর বিশ্বভারতী থেকে ফেরার পথে সিঙ্গুরের বিডিও অফিসে সারপ্রাইজ ভিজিটে পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল...! এদিন ফের একবার সিঙ্গুরে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন তিনি। শুক্রবার মালদা যাচ্ছেন তিনি।

রাজ্যপাল বলেছেন, আমি কাল মালদা যাচ্ছি। হেলিকপ্টার চেয়েছিলাম। পাইনি।

রাজ্যপালের এই ভূমিকারই কড়া সমালোচনায় সরব তৃণমূল। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, রাজ্যপাল এক্তিয়ারভুক্ত কাজ করছেন কি না জানি না, কিন্তু তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক নেতা হিসেবে কাজ করছেন...সিঙ্গুরে কাউকে না বলে চলে গিয়েছিলেন,...কেন গেলেন? কী দরকারে গেলেন? না বলে গেলেন কেন? যেখানে ইচ্ছে সেখানে চলে যাচ্ছেন। ওনার মালদা যাওয়ার কী দরকার?রোজ রাজনৈতিক বাজারে নামব, এসব চলবে না।

মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেছেন, সংবিধান মেনেই তিনি কাজ করছেন। রাজ্যের মানুষের সেবা করাই আমার কাজ।
রাজ্যপাল হিসেবে জগদীপ ধনকড় এ রাজ্যের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্যের সঙ্গে রাজভবনের মতভেদ সামনে এসেছে।

এরইমধ্যে কালীপুজোয় মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে সস্ত্রীক উপস্থিত হন রাজ্যপাল।
কিন্তু পুজো মিটতে না মিটতেই সৌহার্দ্যের পরিবেশে ইতি।...আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প নিয়ে প্রশংসা করায় ফের রাজ্যপালকে নাম না করে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিজেপি পার্টি ম্যানকে আমি উত্তর দিতে পারব না’।

সংঘাতের সেই আবহ বজায় রইল পুরোমাত্রায়।