বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: প্রতিপদ থেকেই শুরু হয়ে গেল পূর্ব মেদিনীপুর (East Midnapore) জেলার মহিষাদল (Mahishadal) রাজবাড়ির দূর্গাপুজো। তবে বনেদি আনায় রাজবাড়ির পুজোর জৌলুশ এখন কিছুটা কমলেও তা হয়ে আসছে রীতিনীতি মেনেই। এবারে রাজবাড়ির পুজো দেখার পাশাপাশি রাজবাড়িতে থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে মহিষাদল রাজবাড়ির তরফে।
প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো মহিষাদল রাজবাড়ির দূর্গাপুজো। রানি জানকি দেবী এই পুজোর প্রচলন করেন। মহিষাদল রাজবাড়িতে মহালয়ার পরের দিন অর্থ্যাৎ প্রতিপদ থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজো। মহিষাদল রাজবাড়ির এই দূর্গামন্ডপেই একচালার প্রতিমা পুজিত হয়ে আসছে বংশপরম্পরায়। আর বংশপরম্পরায় রাজবাড়ির মৃতশিল্পী শেষ তুলির টান দিচ্ছেন দেবী প্রতিমায়। মহিষাদল রাজবাড়ির পুজোয় আগে বাড়ির মহিলারা অংশ নিতে পারতেন না, তাদেরকে থাকতে হত পর্দার আড়ালে। পরে অবশ্য সেই রীতি কিছুটা পালটে এখন দূর্গা মন্ডপের পাশে পর্দা ঘিরে রাখা হয়। বিসর্জনের দিন সিঁদুরখেলায় মেতে ওঠেন এলাকার মহিলারা।
মহিষাদল রাজবাড়ির পুজোয় বেশকিছু বিশেষত্ব রয়েছে। এখানে আগে তিথি অনুযায়ী সেই পরিমান চালের ভোগ নিবেদন করা হোতো। যেমন সপ্তমীতে সাতমন, অষ্টমিতে আটমন এইরকম। এমনকী সপ্তমীর দিন পূর্বপুরুষদের শিকারের অস্ত্র রাখা হয় দেবী প্রতিমার পায়ের নিচে। আগে সন্ধিপুজোতে কামান ফাটানো হলেও তা আজ বন্ধ। এখনও মহিষাদল রাজবাড়ির পুজোর টানে বহু দূর থেকে মানুষজন ছুটে আসেন। আর সেই কথা মাথায় রেখে এবার রাজবাড়িতে রাত্রিবাসের ব্যবস্থাও করেছে মহিষাদল রাজবাড়ি কর্তৃপক্ষ।
পুজো মানে শুধু পুজো নয়, দেদার আড্ডা আর তার সাথে খাওয়া দাওয়া। আর মহিষাদল রাজবাড়িতে রাত্রিবাস করলে আপনার পছন্দের রান্নাবান্না করে দেবেন রাজবাড়ির পাচক ঠাকুর। তাই পুজোকে কেন্দ্র করে সব ধরনের ব্যাবস্থা করেছে মহিষাদল রাজবাড়ি কর্তৃপক্ষ।
বর্ধমানে আনুষ্ঠানিকভাবে শারদ উৎসবের সূচনা
রাজ আমলের প্রথা মেনেই সোমবার প্রতিপদে বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মায়ের ঘট উত্তোলন ও প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়েই বর্ধমানে আনুষ্ঠানিকভাবে শারদ উৎসবের সূচনা হল। মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদে রুপোর ঘটে কৃষ্ণসায়ের থেকে জল ভরে ঘোড়ার গাড়িতে করে ঘট নিয়ে বাদ্যযন্ত্র সহকারে শোভাযাত্রা করে মন্দিরে আনা হয়।
ঘট প্রতিষ্ঠা
এদিনের ঘট উত্তোলন উপলক্ষ্যে শোভাযাত্রায় ভক্তরা অংশ নেন। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও। এক্কাগাড়ি করে কৃষ্ণসায়রের চাঁদনী ঘাট থেকে ঘটে জল ভরা হয় এরপর এই ঘট প্রতিষ্ঠা করা হয় মায়ের মন্দিরে।