কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: প্রকাশিত হল স্কুল শিক্ষকদের বদলির গেজেট নোটিফিকেশন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বদলির পদ্ধতিতে একাধিক বদল হয়েছে। এখন থেকে কোনও আবেদনকারী এসএসসি-র বদলির সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করলে, আগামী ৭ বছর আবেদন করতে পারবেন না। কোনও আবেদনকারী, শেষ বদলির ৫ বছর পরে আবার সাধারণ বদলির আবেদন করতে পারবেন। তবে অবসরের এক বছর আগে বদলির আবেদন করতে পারবেন না কেউ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডিভোর্স বা অপরাধমূক কোনও ঘটনার শিকার এমন শিক্ষিকা বা মহিলা শিক্ষিকাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পাশাপাশি, বাতিল হয়েছে বছরে একবার সাধারণ বদলির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নিয়ম।


শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি নিয়ে এখন রাজ্য রাজনীতি সরগরম। গত ২৪ অগাস্ট বদলির প্রতিবাদে বিকাশ ভবনের বাইরে পুলিশের সামনেই, বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন পাঁচজন শিক্ষিকা। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা-সহ একাধিক ধারায় এফআইআর দায়ের হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ, মইদুলকে গ্রেফতার করতে বেলেঘাটার চাউলপট্টিতে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছয় বিধাননগর উত্তর ও বেলেঘাটা থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। দীর্ঘক্ষণ এই পরিস্থিতি চলার পর তাঁর শ্বশুরবাড়ির সামনে থেকে পুলিশকর্মীদের একাংশ সরে যান। কিন্তু এদিন সকালেও সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল। এই ঘটনায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রকে একটি ইমেল করে অভিযোগ জানিয়েছেন মইদুল ইসলামের স্ত্রী। 


এই ঘটনাকে ঘিরে তুঙ্গে তৃণমূল-বিজেপি তরজা। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘শিক্ষকদের যেভাবে বদলি করা হয়েছে, তাঁরা কষ্টের মধ্যে আছেন। সেই আন্দোলনে যাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁদের জব্দ করার চেষ্টা চলছে।’


পাল্টা তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেছেন, ‘পুলিশ বিষয়টি দেখছে। এ বিষয়ে ইন্টারফেয়ার করা উচিত নয়। যারা এ কথা বলছে, তারা বিরোধীদের বিরুদ্ধে যা করেছে, তাদের মুখে এসব মানায় না। আর দিলীপ ঘোষ হাস্যকর।’


পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মইদুল ইসলাম। তবে তাঁকে এদিন কোনও রক্ষাকবচ দেয়নি আদালত।


আদালতে পুলিশ জানায়, ৩০৬ ধারায় মইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। সেইজন্যই তাঁর বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল। এদিনের শুনানির পর মামলাটি হাইকোর্টের নির্ধারিত ক্রমতালিকা থেকে আপাতত বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রয়োজন হলে মামলাকারী ফের বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবেন।