রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে দলবদলের পালা চলছে। আর সেই ভাঙনের আঁচ এবার পড়ল সংসারেও। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ভাঙন। স্বামী সৌমিত্র বিবাহবিচ্ছেদের কথা বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন সুজাতা। রাজনৈতিক পথ বিভাজনে স্বামী-স্ত্রীর বাকযুদ্ধে রাজনীতির থেকে সাংসারিক ও সম্পর্ক সংক্রান্ত আবেগই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। চোখে জল নিয়েও তাঁরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
সুজাতা বলেছেন, আমি মনে করি, পরিবার ও রাজনীতি সম্পূর্ণ আলাদা। দলবদলের জন্য যদি সংসার ভাঙে, তাহলে তা সৌমিত্রর সিদ্ধান্ত। একটা দলে সম্মান পাচ্ছিলাম না। তাই বিজেপি ছেড়েছি। সেজন্য যদি আমার স্বামী, যাঁকে দশ বছর ধরে ভালোবেসেছি, বিয়ে করেছি, একসঙ্গে ঝড়ঝাপটা সামলেছি, (সবচেয়ে বড় ব্যাপার তৃণমূল ছাড়ার পর সবচেয়ে বড় ঝড় আমার ওপরেই পড়েছিল), বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান তাহলে তা খুব দুঃখের। স্বামী বিজেপিতে থাকলেও, তিনি সেখানে সম্মান ও মর্যাদা কিছুই পাননি বলে অভিযোগ করেছেন সুজাতা। যদিও, তা মানতে নারাজ সৌমিত্র।
Sujata Mandal Joins TMC: জ্যোতিষীর চক্করে পড়ে এ সব করল, ভাল থেক সুজাতা, ডিভোর্সের কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন সৌমিত্র
তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক কারণেই তৃণমূলে যোগদান। এজন্য যদি সম্পর্ক বিচ্ছেদে দলের চাপ থাকে বা সম্পর্ক নেই প্রমাণ দিতে পদবীও ত্যাগ করতে বলা হয়, তাহলে বলার কিছু নেই। আমি যদি ওর লক্ষ্মীই ছিলাম, তাহলে সৌমিত্রই আমার নারায়ণ। লক্ষ্মী-নারায়ণের সম্পর্ক তো দলগত কারণে ভাঙতে পারে না। দলের জন্য অনেক সময় দিয়েছে সৌমিত্র। এজন্য সংসার ছেড়ে দিয়েছে। আমার সঙ্গে দশ মাস ভালো করে যোগাযোগও রাখে না। এরপরও যদি পার্টির বিশ্বাস অর্জনের জন্য সুজাতার সঙ্গে সম্পর্ক খাতায় কলমে মুছে ফেলতে হচ্ছে, তাহলে তা কতটা দুঃখের সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
সুজাতা বলেছেন, আমি তাকে আজও ভালোবাসি। ওর কোনও খারাপ চাই না। আমাকে ডিভোর্স দিয়ে ও যদি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হয়, আমার থেকে খুশি আর কেউ হবে না। বিজেপি ক্ষমতায় এলে ওর এই আত্মত্যাগ যেন ওকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দেয়। স্ত্রী হিসেবে আমি এটাই চাই। বিজেপি যেন সৌমিত্রর এত আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের মর্যাদা দেয়।
পরস্পরের বাকযুদ্ধে দুজনেই বারেবারে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। সৌমিত্র যখন বলছেন, আজ সম্পূর্ণভাবে খাঁ পদবী থেকে মুক্তি দিচ্ছি, তখন ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেলেছেন তিনি।
সুজাতা বলেছেন, পদবী নয়, কর্মই মানুষের পরিচিতি।