কলকাতা: কদিন ধরে একটা জ্যোতিষীর সঙ্গে জুটেছিল। ড্রাইভার বলল, একটা জ্যোতিষীর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, সে বলেছে, তৃণমূলে গেলে বড় জায়গা পাবে। বাচ্চা মেয়ে, ভুল করল। বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। স্ত্রীকে ডিভোর্সের নোটিশ পাঠাচ্ছেন তিনি।


মানুষের কথা ভাবতে গিয়ে, মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেননি, কখন ঘরের লক্ষ্মীকেই তৃণমূল চুরি করে নিয়ে গিয়েছে। স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় এ কথা বলতে বলতে প্রকাশ্যে কেঁদে ফেললেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। স্ত্রীর কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, বাচ্চা মেয়ে, অনেক উচ্চাকাঙ্খা ছিল। বলত, বিজেপিতে তুমি বড় পদ পেলে, আমি কেন পেলাম না। লোকসভা ভোটের সময় বিষ্ণুপুরে তো ও বিজেপির জন্য লড়েনি, নিজের স্বামীর জন্য লড়েছিল। আমি যে সাংসদ পদ পেয়েছি, তার মান্যতা ও পেয়েছিল। বিজেপির নিয়ম নয় একই পার্টিতে দু’জন দুটো পদ পাবে। অমিত শাহ, কৈলাস বিজয়বর্গীয় ওকে নিজেদের মেয়ের মত দেখতেন। অমিত শাহ বলতেন, ওই আসল সাংসদ। আমি ওকে স্বপ্নে, ভালবাসায় মুড়তে পারি। কিন্তু যেভাবে দল পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে আর কোনওদিন এক হওয়া যাবে না।

সুজাতা বলেছিলেন তাঁকে তৃণমূলে ফিরে যেতে? সৌমিত্রর দাবি, তৃণমূলে ফেরা নিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনও কথা হয়নি। গত ৭ দিন কথা হয়নি, শুধু হোয়াটসঅ্যাপে কথা হত। এখন খাঁ পদবি ছেড়ে সুজাতা মণ্ডল হয়ে যা খুশি করুক। পারিবারিক সম্পর্কে রাজনীতি এসেছে, স্ত্রীর সিদ্ধান্তে তিনি বাধা দেবেন না। ভেবেছিলেন, জানুয়ারিতে বিয়ের অ্যালবাম বানাবেন, তা আর হল না, উল্টে ডিভোর্সের নোটিস পাঠাতে হচ্ছে। তাঁর কথায়, আমি পার্টির যুব মোর্চার সভাপতি, এই ৩৯+ বয়সে এর বেশি আর কী পেতে পারি! আমি তোমাকে ভালবেসেছি, আমার লড়াই তোমার বিরুদ্ধে নয়, তৃণমূলের বিরুদ্ধে। একজনকে ভালবাসতে গিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্নকে হারিয়ে দিতে পারি না।

সৌমিত্র জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা ছিল না, ভোটে জেতার পর ৩৬টা মামলা দেওয়া হয়েছে। ৩০ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে হয়েছে তাঁকে। সুজাতার চাকরি খেয়ে নেয় তৃণমূল। তবু স্ত্রীকে তিনি কিছু বুঝতে দেননি। আর এখন ঘরের লক্ষ্মী তৃণমূল চুরি করে নিয়ে গেল। ‘ভাল থেক সুজাতা, তোমাকে ভালবাসি’। চোখে জল সৌমিত্রের।