লখনউ: হাদহা সরাইয়ের ভিক্ষমশাহ লেনের ধারে কেনা বাড়ি বাড়িটার উপর আলাদা একটা আবেগ, মায়া জড়ানো ছিল ভারতরত্ন ওস্তাদ বিসমিল্লা খানের। এ বাড়ি কেনা হয়েছিল ১৯৩৬ সালে। ১৯৬৩ সালে আমেরিকায় বসবাস করার প্রস্তাব পেয়েছিলেন উস্তাদ। তবুও তিনি এ বাড়ি ছেড়ে যেতে পারেননি। অথচ তাঁর ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকীর আগে ১২ অগাস্ট এ বাড়ির একাংশ ভেঙে গুড়িয়ে দিল যোগী সরকার। ওই জায়গায় তৈরি হবে কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, এমনটা জানিয়েছেন শিল্পীর পরিবারের সদস্য। এমনকী যে ঘরে ওস্তাদ বিসমিল্লা খান রেওয়াজ করতেন সেটিও এখন ধংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সানাইয়ের রাগে-অনুরাগে কত স্মৃতি ও ইতিহাস যে বাড়িটিতে জমে রয়েছে তার খোঁজ কে নেবে!
২০০৬ সালে বিসমিল্লা মারা যাওয়ার পর তাঁর বাড়িটিতে সংগ্রহশালা গড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাঁর গুণগ্রাহী ও ভক্তরা। কিন্তু তা আর হয়নি। বহুদিন ধরেই বাড়িটিকে হেরিটেজ প্রপার্টি করার দাবি উঠেছিল। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ সরকার তাতে কান দেয়নি। তাঁর সানাই, ছবি, পুরস্কার সহ অনেক কিছুই আত্মীয়রা ফেলে নষ্ট করেছে বলেও অভিযোগ উঠছে।
উত্তরপ্রদেশের এই বাড়ির দোতলায় নিয়মিত রেওয়াজ করতে উস্তাদ। আর তাঁর শিষ্যরাও এখানে প্রতিদিন আসতেন। কিন্তু ২০০৬ সালে বিসমিল্লার মৃত্যুর পর বাড়ি ভাঙার জন্য ওত পেতে ছিলেন আত্মীয়রা এবং স্থানীয় প্রশাসন।

যদিও শিল্পীর শিষ্য এবং পালিতা কন্যা সঙ্গীতশিল্পী সোম ঘোষ কখনই চাননি বাড়িটি ভাঙা হোক। তাই তাঁরা রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানান হেরিটেজ ঘোষণা করার জন্য। বাড়িটিকে একটি সংগ্রহশালা ঘোষণা করারও প্রস্তাব ওঠে। কিন্তু সেই আবেদন কানে তোলেনি প্রশাসন। বরং ২১ আগস্টের আগেই ভেঙে ফেলা হল বাড়ির একাংশ। সেখানে এবার গজিয়ে উঠবে ঝা চকচকে কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স।


বিসমিল্লার বাড়ি ভাঙার নিন্দা করে সমাজবাদী পার্টি (সপা) নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব ট্যুইট করেছেন, বাড়িটি বিল্ডারদের হাতে যাওয়ার থাকা রক্ষা করে সরকারের উচিত সেটিতে স্মারক হিসাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া। ওখানে ভারতরত্ন উস্তাদ বিসমিল্লাহ খান রেওয়াজ করতেন, যা ছিল তাঁর কাছে পুজো, নিবেদনের সমান। যারা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করে না, তাদের শুধু ইতিহাসই নয়, বর্তমানও ভুলে যায়।