নয়াদিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করা "কোভিশিল্ড" ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হচ্ছে ভারতে। ভারতের ভ্যাকসিন উফপাদনকারী সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়া চালু করে দিয়েছে।


কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে অক্সফোর্ডের অন্তর্গত জেনার ইনস্টিটিউট। ভ্যাকসিনের সূত্রে সহায়তা করেছে ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা। পরবর্তীকালে, স্বল্প ও মধ্য আয় করা দেশগুলির জন্য ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে ভারতীয় সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।


চলতি মাসের গোড়ায় ভারতে অ্যাডভান্সড ট্রায়াল শুরু করায় সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে দেশের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনেরাল। জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ওই ট্রায়াল হবে "অবজার্ভার ব্লাইন্ড, র‌্যান্ডম তবে নিয়ন্ত্রিত"। অর্থাৎ, যাঁদের শরীরে এই ভ্যাকসিনের প্রক্রিয়া চালানো হবে, তাঁদের আগাম বাছাই করা হবে না। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের সুরক্ষা ও রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।


ট্রায়ালের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ১৭টি জায়গা চিহ্নিত করেছে পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট। এই জায়গাগুলি হল-- অন্ধ্র মেডিক্যাল কলেজ(বিশাখাপত্তনম), জেএসএস অ্য়াকাডেমি অফ হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (মহীশূর), শেঠ জিএস মেডিক্যাল কলেজ ও কেইএম হাসপাতাল (মুম্বই), কেইএম রিসার্চ সেন্টার (ভাদু), বিজে মেডিক্যাল কলেজ ও সাসুন জেনারেল হাসপাতাল (পুণে), অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (যোধপুর), রাজেন্দ্র মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (পটনা), ইনস্টিটিউট অফ কমিউনিটি মেডিসিন (চেন্নাই), পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (কলকাতা), ভারতী বিদ্যাপীঠ ডিম্ড ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (পুণে), জেহাঙ্গির হাসপাতাল (পুণে), অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সস (দিল্লি), আইসিএমআর রিজিওনাল মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টার (গোরক্ষপুর), টিএন মেডিক্যাল কলেজ ও বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতাল (মুম্বই), মহাত্মা গাঁধী ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (সেবাগ্রাম) ও গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ (নাগপুর)।


জানা গিয়েছে, ট্রায়াল প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন প্রায় ১৬০০ জন। এর মধ্য়ে ৪০০ জন অংশ নেবেন ইমিউনোজেনেসিটি কোহোর্টে। ৩:১ অনুপাতে তাঁদের ওপর কোভিশিল্ড বা চাদোক্স প্রয়োগ করা হবে।বাকি ১২০০ স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেবেন সেফটি কোহর্টে। ৩:১ অনুপাতে তাঁদের ওপর কোভিশিল্ড বা প্লাসেবো প্রয়োগ করা হবে।


জানা গিয়েছে, প্রত্যেককে চার সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি ডোজ দেওয়া হবে। অর্থাৎ, প্রথম ডোজ প্রথম দিন দেওয়া হলে দ্বিতীয় ডোজ ২৯ তম দিনে দেওয়া হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ হলে সেই তথ্য ডেটা সেফটি মনিটরিং বোর্ডকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পরে তা যাবে কেন্দ্রীয় ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনে। সেখানেই হবে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল।


অক্সফোর্ডের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য আইসিএমআর-এর অনুমোদন পেয়েছে মুম্বইয়ের দুটি সরকারি হাসপাতাল -- পারেলের কিং এডোয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতাল এবং মুম্বই সন্ট্রালের বিওয়াইএল নায়ার হাসপাতাল। বর্তমানে, স্বেচ্ছাসেবকের খোঁজে বৃহন্মুম্বই পুরসভা।