Bhargavastra: ভারতের আকাশ সীমানায় ড্রোন আক্রমণ রুখতে আরও মজবুত হল দেশে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। নতুন একটি কাউন্টার ড্রোন সিস্টেমের সফল পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে সম্প্রতি। এর খরচ তুলনায় অনেক কম। নাম 'ভার্গবাস্ত্র'। কম খরচের এই কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম নির্মাণ করেছে সোলার ডিফেন্স অ্যান্ড এরোস্পেস লিমিটেড (এসডিএএল)। বিগত কয়েকদিনে পাকিস্তানের তরফে কাধিকবার ড্রোন হামলার সম্মুখীন হয়েছে ভারত। যদিও পাকিস্তানের তরফে উড়ে আসা ঝাঁকে ঝাঁকে ড্রোন প্রতিহত করেছে ভারতের এয়ার ডিফেন্স। দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ক্ষয়ক্ষতি করতে পারেনি এইসব ড্রোন। তবে ভবিষ্যতের জন্য আরও সতর্ক হতে চায় ভারত। আর সেই জন্য ভার্গবাস্ত্র তৈরি করা হয়েছে। 'হার্ড কিল' মোডের এই কাউন্টার-ড্রোন সিস্টেম ডিজাইন করা হয়েছে ভারতের আকাশ সীমান্ত আরও সুরক্ষিত রাখার জন্য। শত্রুপক্ষের তরফে ড্রোন হামলা হলে, ঝাঁকে ঝাঁকে ড্রোন উড়ে এলেও সেগুলিকে প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে এই 'ভার্গবাস্ত্র'।
ইতিমধ্যেই এই কাউন্টার ড্রোন সিস্টেমের পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে এবং তা চূড়ান্ত ভাবে সফল হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। ভার্গবাস্ত্র নামের এই কাউন্টার ড্রোন সিস্টেমে ব্যবহার করা হয়েছে মাইক্রো রকেট। গোপালপুরের Seaward Firing Range- এ মাইক্রো রকেট যুক্ত এই কাউন্টার ড্রোন সিস্টেমের একাধিক কঠিন পর্যায়ের পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তা পূরণ হয়েছে। নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে সফল হয়েছে ভার্গবাস্ত্র। রকেট নিক্ষেপের জন্য তিনটি ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে গোপালপুরে। ১৩ মে এই ট্রায়ালের সময় সেখানে ছিলেন আর্মি এয়ার ডিফেন্সের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। দু'টি ট্রায়ালে একটি করে রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছিল। আর একটি ট্রায়ালে দু'টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। এক্ষেত্রে সালভো মোডে মাত্র ২ সেকেন্ডের মধ্যেই পরপর ২টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করেছে চার-চারটি রকেটই। বড় আকারের ড্রোন আক্রমণ হলে তা প্রতিহত করার জন্য যে নির্ধারিত প্যারামিটার ধার্য হয়েছিল তা অর্জন হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তি।
ভার্গবাস্ত্রে বেশ কিছু উন্নত ও আধুনিক ফিচার যুক্ত রয়েছে যার সাহায্যে এই কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম সহজে ক্ষুদ্র আকৃতির ড্রোন চিহ্নিত করতে পারে এবং তা প্রতিহত করতেও সিদ্ধহস্ত। ২.৫ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে আসা ক্ষুদ্র আকৃতির ড্রোন চিহ্নিত করতে পারে এই ভার্গবাস্ত্র। সেগুলিকে সফলভাবে নষ্ট করতেও সক্ষম এই সিস্টেম। প্রথম স্তরের প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে এই কাউন্টার ড্রোন সিস্টেমে ব্যবহার করা হয় আই-গাইডেড মাইক্রো রকেট, যেগুলি ২০ মিটার ব্যাসার্ধ এলাকা জুড়ে আসা ড্রোনের ঝাঁককে প্রতিহত করতে পাতে। এছাড়াও দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে গাইডেড মাইক্রো মিসাইল। এগুলি ইতিমধ্যেই পরীক্ষিত। এক্ষেত্রে একদম বেছে বেছে ড্রোন টার্গেট করে হামলা চালানো সম্ভব। আর তার প্রভাবও হয় যথেষ্ট জোরদার।
ভার্গবাস্ত্র এমন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এই কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যায়। ৫০০০ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন এলাকায় যেমন ব্যবহার করা যাবে, তেমনই ভার্গবাস্ত্র কাজ করবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে যেকোনও জায়গায়। ভারতের স্বশস্ত্র সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ধরনের ইউনিক অপারেশনে সাহায্য করবে ভার্গবাস্ত্র। এই সিস্টেমের র্যাডার ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার দূর থেকেই আকাশপথে আসা কোনও ক্ষুদ্র বিপদের সম্ভাবনাও চিহ্নিত করতে পারে।