নয়াদিল্লি : ভারতের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর। নিজের পড়াশোনা থেকে শুরু করে মানুষ হিসাবে তাঁকে গঠনে ভারতের ভূমিকা সব তুলে ধরেন এইচ ই দাশো শেরিং। এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড সামিটে যোগ দিয়ে মন্তব্য করলেন, 'গোটা বিশ্বের প্রয়োজন ভারতকে।' এমনকী সামনে আনলেন নিজের অনেক ব্যক্তিগত কথাও, যা ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেও রয়েছে তাঁর বিশাল যোগ।
বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সঞ্চালকের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ভারতকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আমার দেশকে সেবা করার জন্য ভারত কীভাবে আমাকে গড়েছে ? একটা রহস্যের কথা বলছি। এখানে উপস্থিত আমার ভুটানি সহকর্মীরাও সেটা জানেন না। আমার জন্ম ভারতে। ১৯৬৫ সাল। আমি কালিম্পঙে জন্মেছিলাম। আমার বাবা কালিম্পঙে কাজ করতেন। ভারতে আমি ১১ বছর পড়াশোনা করেছি। আমার বেড়ে ওঠার সময়গুলো কেটেছে ভারতে। কিন্ডারগার্ডেন স্কুল থেকে ক্লাস টেন পর্যন্ত আমি ভারতে পড়াশোনা করেছি। সেই দিনগুলিতে অনেক ভুটানিই ভারতে পড়াশোনা করেছেন। কারণ, তখন আমাদের ভুটানে অনেক স্কুল ছিল না। কিন্তু, যখন আমরা স্কুল প্রতিষ্ঠা করলাম, আমাদের পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। সেই শিক্ষকরা এলেন ভারত থেকে। আমি ভারতীয় শিক্ষিকদের তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠেছি। আমি বিশ্বাস করি যে, তাঁরা আমাদের ভাল শিক্ষা দিয়েছেন। কারণ, তার উপর ভিত্তি করেই আমরা দেশে ফিরে গিয়ে আমাদের দেশ, দেশের মানুষকে সেবা করছি। "
তুলে ধরলেন গোটা বিশ্বের জন্য ভারতের গুরুত্বের কথাও। তিনি বলেন, "গোটা বিশ্বের প্রয়োজন ভারতকে। এই শতকটা কেন ভারতের ? একাধিক কারণ আছে। ভারতে জনসংখ্যা সবথেকে বেশি। ভারতরে উন্নয়নশীল অর্থনীতি আছে। ৩ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার অতিক্রম করে গেছে। এটা সম্ভবত ৫ ট্রিলিয়ন ইউএস ডলার পেরিয়ে যেত, যদি কোভিড না আসত। প্রচুর ক্রেতা। প্রত্যেক দিক থেকে দেখলেই, এটা ভারতের শতাব্দী। আজ শুধু ভারতীয়রাই ভারতের লিডারশিপে আস্থা রাখেন না, গ্লোবাল সাউথও আজ ভারতের লিডারশিপে আস্থা রাখছে। আজ যদি কোনও দেশ সমস্যার সমাধান করতে পারে...সেটা ভারত। আর্থিক দিক থেকে, বিশ্ব আজ ভারতের বাজারের দিকে তাকিয়ে। কোভিড অতিমারীর সময়, ভ্যাকসিন ও ওষুধের জন্য ভারতের দিকে তাকিয়ে ছিল বিশ্ব। এমনকী, রাশিয়া ও ইউক্রেনের সমস্যা যদি কেউ মেটাতে পারেন, তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাই, এই শতাব্দীটা ভারতের শতাব্দী।"
ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করতে গিয়ে বলেন, "আমার স্ত্রী এখন একটা বাড়ি তৈরি করছেন। তিনি অর্ধেক সময় কাটান শিলিগুড়িতে, পশ্চিমবঙ্গে। এভাবে নিজের অধিকাংশ জিনিস কেনেন, শপিং করেন। সত্যি কথা বললে তাঁকে সবসময় সেখানে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। শিলিগুড়িতে থাকা বন্ধুদের...অর্থাৎ দোকানদারদের ফোন করে দেন। তাঁরাই জিনিসপত্র পাঠিয়ে দেন।"