নয়াদিল্লি: আমেরিকা থেকে ভারতে আসবে করোনার টিকা। গতকাল, বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এদিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ফোনে কথা হয়। এরপরই ভারতের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানায় মার্কিন প্রদেশ।


গতকাল, বৃহস্পতিবার, আমেরিকার দূতাবাসের তরফে একটি বিবৃতি জারি করা হয়। যেখানে বলা হয়, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এনিয়ে কথা বলেছেন। জুন মাসের মধ্যে ভারতে পৌঁছবে ওই ভ্যাকসিন। পরে এ নিয়ে মোদির টুইট করে বলেন, টিকাকরণে ভারত ও আমেরিকা একে অন্যকে সাহায্য করবে। তাঁর আশা, দ্রুত করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে ছন্দে ফিরবে বিশ্ব। তারপরই কমলা হ্যারিসকে এদেশে অভ্যর্থনা জানানো হবে।


ভ্যাকসিন বণ্টন নিয়ে আন্তর্জাতিক সহ অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে পড়েন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরপরই প্রথম দফায় ২৫  মিলিয়ন ভ্যাকসিন বিশ্বের একাধিক দেশকে দেওয়ার ঘোষণা করেন তিনি। জো বাইডেন জানিয়েছে, রাষ্ট্রসংঘের কোভ্যাক্স গ্লোবাল ভ্যাকসিন শেয়ারিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে ৭৫ শতাংশ বাড়তি ভ্যাকসিন বিতরণ করবে আমেরিকা। এই ২৫ মিলিয়ন ভ্যাকসিনের মধ্যে ৬ মিলিয়ন পাবে ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, ম্যাক্সিকো এবং কানাডা।  


কীভাবে বণ্টন হবে এই ভ্যাকসিন? প্রয়োজন, সঙ্কটের ভিত্তিতে সরাসরি দেশেগুলিতে দেওয়া হবে এই ভ্যাকসিন। এই সিদ্ধান্তের পরই মোদিকে ফোন করেন কমলা হ্যারিস। তবে শুধু ভারতের প্রধানমন্ত্রীই নয়, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে ম্যানুয়েল লোপাজ ওব্রাডর, গুয়েতামালার প্রেসিডেন্ট অ্যালোজান্দ্রো গিয়াম্মাত্তেই, ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির চেয়ারম্যান তথা প্রধানমন্ত্রী কেথ রোলে। হোয়াইট হাউসের বিবৃতি অনুযায়ী, মার্কিন প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ৮০ মিলিয়ন অর্থাৎ ৮ কোটি  ভ্যাকসিন জুনের শেষ সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বের একাধিক দেশে বণ্টন করা হবে। এর মধ্যে ভারতে আসবে আড়াই কোটি। বিশ্ববাসীর স্বার্থে কোভিড ১৯ এর বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করার আহ্বানও জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।


ভারতে ভয়ের ছবি দেখাচ্ছে করোনা। আছড়ে পড়েছে দ্বিতীয় ঢেউ। তাতে কার্যত ছারখার গোটা দেশ। দৈনিক সংক্রমণ কমলেও এখনও অব্যাহত মৃত্যু মিছিল। চলতি বছর ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে টিকাকরণ। প্রাথমিকভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হয় স্বাস্থ্যকর্মী সহ প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের। এরপর ১ মার্চ থেকে ৬০ ঊর্ধ্ব এবং ৪৫ ঊর্ধ্ব যাঁদের কো-মর্বিডিটি আছে তাঁদের টিকাকরণ হয়। ৪৫ ঊর্ধ্বদের টিকাকরণ শুরু হয় ১ এপ্রিল। তৃতীয় দফায় টিকাকরণ শুরু হয় ১ মে। ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সিদের টিকাকরণের কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র।  কিন্তু দিকে দিকে ভ্যাকসিন নিয়ে হয়রানির ছবি।


সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন চেয়ে আবেদন জানানো হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশে দেওয়া হবে ৭ মিলিয়ন ভ্যাকসিন। তবে কোনও নাম জানানো হয়নি। লাতিন আমেরিকা, ক্যারাবিয়ান এবং আফ্রিকাকে দেওয়া হবে ৫  মিলিয়ন ভ্য়াকসিন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা ভ্যাকসিন বণ্টনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা ভবিষ্য়তে জানাব কীভাবে ভ্যাকসিন বণ্টন করা হবে। তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের যৌথ লড়াইয়ে ভ্যাকসিনগুলির অস্ত্রাগার হবে।