নয়াদিল্লি: জাতপাতের নামে দেশে বিভাজন (Division Along Caste Line) তৈরির চেষ্টা করছে বিরোধী শিবির, অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। সোমবার বিতর্কিত জাতভিত্তিক সমীক্ষার বিশদ তথ্য প্রকাশ করেছে বিহার সরকার (Bihar Governemnt Controversial Caste Based Census Report)। ঠিক তার পরেই সরব প্রধানমন্ত্রী। কোনও নির্দিষ্ট দল বা সমীক্ষার কথা বলেননি তিনি। তবে মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়র থেকে এদিন বলেন, 'গরিব মানুষের ভাবাবেগ নিয়ে অতীতেও খেলেছেন ওঁরা...এখনও একই ধরনের খেলা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।'


কী বললেন প্রধানমন্ত্রী?
গ্বালিয়রের সভা থেকে সোমবার প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'অতীতেও জাতের নামে এই দেশে বিভাজন করেছে ওরা, এখনও একই পাপ করছে। আগে ওরা দুর্নীতি করেছে, এখন আরও বেশি দুর্নীতি করছে।' প্রধানমন্ত্রীর কথায়, জাতপাতের ভিত্তিতে বিভাজনের যে কোনও ধরনের চেষ্টা এক ধরনের 'পাপ'। লক্ষণীয় বিষয় হল, গত শনিবার, ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, 'অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্তদের সংখ্যা জানতে  ক্ষমতায় ফিরলে আমরা প্রথমেই জাতভিত্তিক সমীক্ষা করব।' এমনকি এদিন, বিহার সরকার সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করলে রাহুল গাঁধী তাঁর X হ্যান্ডেলে ফের জানান, কেন্দ্রীয় সরকার যাতে গোটা দেশে জাতভিত্তিক সমীক্ষা করে, তা নিয়ে আরও একবার নিজেদের দাবি জানাচ্ছে কংগ্রেস। এতেই শেষ নয়। রাহুলকে বলতে শোনা যায়, 'কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার এই গণনা করে ফেলেছিলও। কিন্তু মোদি সরকার তার ফলাফল প্রকাশ করেনি। যদিও সামাজিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে চলা প্রকল্পগুলি আরও শক্তিশালী করতে হলে এই ধরনের সমীক্ষা জরুরি।' এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর আজকের বার্তার সুনির্দিষ্ট তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আসলে এর মাধ্যমে এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা হয়েছে। বিহারে বিজেপির প্রাক্তন জোটশরিক তথা বর্তমান শাসকজোটের অন্যতম দল জেডি(ইউ) ও মধ্যপ্রদেশের বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস, দু'তরফকেই প্রধানমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, চাপ বাড়লেও দেশজুড়ে জাতভিত্তিক গণনার রাস্তায় কেন্দ্রীয় সরকার হাঁটবে না।


প্রেক্ষাপট...
যদিও রাজনৈতিক মহলের অন্য অংশের বিশ্লেষণ, এদিনের পর কিছুটা হলেও চাপে থাকবে গেরুয়া শিবির। কারণ, বিহার সরকারের বিতর্কিত রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই রাজ্যের অন্তত ৬৩ শতাংশ মানুষ অন্যান্য় অনগ্রসর সম্প্রদায়ের। ২০ শতাংশ তফসিলি জাতি বা উপজাতিভুক্ত। তথাকথিত উঁচু জাতের বাসিন্দা ১৫.৫ শতাংশ। গো-বলয়ের রাজনীতিতে জাতপাতের সমীকরণের তাৎপর্য অজানা নয়। তার উপর বছর ঘুরলেই সাধারণ নির্বাচন। বিরোধী 'I.N.D.I.A' ব্লক এটিকে যে রাজনীতির ইস্যু করতে পারে, সে ইঙ্গিত মুম্বইয়ের সম্মেলন থেকে কিছুটা পাওয়া গিয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে কেন্দ্র কোন দিকে এগোয়, সে দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি থাকবে সব মহলের।


আরও পড়ুন:'অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে কেন হাত কাঁপছে মমতার ?' প্রশ্ন অনুরাগের