কলকাতা: ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ আজ ভবানীভবনে যাবেন না। আর্থিক দুর্নীতির এক মামলায় তাঁকে নোটিস পাঠিয়ে তলব করেছিল সিআইডি। আজই তাঁকে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু অর্জুনের দাবি, তিনি গতকালই সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসারকে জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ভবানীভবনে যেতে পারবেন না। যদি ভার্চুয়াল জিজ্ঞাসাবাদের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে তাতে তিনি অংশ নেবেন।
উল্লেখ্য, ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহকে তলব করেছিল সিআইডি। জালিয়াতি, প্রতারণার অভিযোগে অর্জুন সিংহকে নোটিস দেওয়া হয়েছে সিআইডির তরফে। ২৫ মে সকাল ১১টায় ভবানীভবনে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
জানা গিয়েছে, ভাটপাড়া পুরসভায় চেয়ারম্যান থাকাকালীন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে অর্জুন সিংহ-র বিরুদ্ধে।২০১০ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত তৃণমূল পরিচালিত ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন অর্জুন সিংহ। সাড়ে ৪ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে অর্জুন সিংহকে তলব করা হয়ে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধেয় রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের আধিকারিকরা জগদ্দল মেঘনা মোড়ের মজদুর ভবনে অর্জুন সিংয়ের বাড়ি পৌঁছে যান। তবে সেই সময়ে অর্জুন সিং বাড়িতে ছিলেন না। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষাও করে সিআইডি-র তদন্তকারী দল। এরপর তাঁর বাড়িতেই নোটিস দিয়ে লাগিয়ে যায় সিআইডি। দুর্নীতির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদকে ডাকা হয়ে বলেই জানা গিয়েছিল। জানা গিয়েছে, আর্থিক দুর্নীতির মামলায় নোটিস দেওয়া হয়েছে অর্জুন সিংহ-র ভাইপোকেও। তাঁকেও ২৫ তারিখ ভবানীভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
বছর তিনেক আগে অবৈধভাবে ভাটপাড়া-নৈহাটি সমবায় ব্যাঙ্কের প্রায় ২০ কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে। তদন্ত শুরু হয়। এরপর জানা যায়, ২০১৮র অক্টোবরে দু-দফায় কাগজে কলমে সবমিলিয়ে ১৩ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ভাটপাড়া পুরসভার এক ঠিকাদারকে। কিন্তু সেই টাকা যায় অন্য অ্যাকাউন্টে। এই দুর্নীতিতে নাম জড়ায় ব্যাঙ্কের তৎকালীন সিইও চন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যেরও। ঘটনায় এক আধিকারিক-সহ ওই ঠিকাদারকেও গ্রেফতার করা হয়।
এই ঘটনাতেই নাম জড়িয়ে ছিল বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের। তাঁর বিরুদ্ধে ১৩ কোটি টাকা বেনামি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফারের অভিযোগ ওঠে। আর এই টাকা ছিল আসলে ভাটপাড়া চেয়ারম্যানের রিলিফ ফান্ডের। এই ঘটনায় তল্লাশিও চালানো হয় সাংসদের বাড়িতে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন অর্জুন সিংহ।
ঘটনায় ওয়াকিবহাল মহল বলছে নারদকাণ্ডে ফিরহাদদের গ্রেফতারির পাল্টা চাপ হিসেবেই এই পদক্ষেপ তৃণমূলের। যদিও এই বিষয়ে কোনও পক্ষই কোনও মন্তব্য করেনি।