নয়াদিল্লি: খাতায় কলমে এখনও বিজেপি-র সাংসদই তিনি। কিন্তু দলের বিরুদ্ধেই আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন। আবারও সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুললেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গাঁধী (Varun Gandhi)। আফ্রিকা থেকে আনা চিতার পর পর মৃত্যু নিয়ে এবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করলেন তিনি। নিষ্ঠুর আচরণ এবং গাফিলতির অভিযোগ তুললেন। নিজেদের দেশের বিরল প্রজাতির প্রাণী সংরক্ষণে আরও সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে বলেও মন্তব্য করলেন। (Cheetah Deaths)


মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে গত পাঁচ মাসে পর পর ন'টি চিতার মৃত্যুর হয়েছে। সেই নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে। ঢাকঢোল পিটিয়ে বিদেশ থেকে চিতা নিয়ে এলেও, তার দেখভালের ব্যবস্থাপনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বিদেশ থেকেও তা নিয়ে চিঠি দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কুনো ন্যাশনাল পার্কে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই, যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কথা শোনেন না বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। 


তার মধ্যেই শনিবারও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও চিতা আনার ঘোষণা করা হয়েছে। তাতেই ট্যুইটারে (সাবেক X) মুখ খুললেন বরুণ। তিনি লেখেন, 'আফ্রিকা থেকে চিতা এনে, তাদের মধ্যে ন'টিকে বিদেশের মাটিতে মরতে দেওয়া শুধুমাত্র নিষ্ঠুরতাই নয়, চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। এঁদের দুর্ভোগ না বাড়িয়ে, নিজেদের দেশের বিরল প্রজাতির প্রাণীদের সংরক্ষণ করা উচিত আগে। অবিবেচকের মতো বিদেশ থেকে এই সমস্ত প্রাণীদের আনা বন্ধ হওয়া উচিত অবিলম্বে, তার পরিবর্তে নিজের দেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে উদ্যোগী হওয়া উচিত'।



আরও পড়ুন: One Nation, One Election: শীঘ্রই সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশ, ২৩ সেপ্টেম্বর বৈঠক ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে, বিরোধিতায় কংগ্রেস


আফ্রিকা থেকে চিতা আনার শ্রেয় এযাবৎ প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদিকেই দিয়ে এসেছে কেন্দ্র। বিজেপি-র তরফে তাঁকে 'বাঘ' বলেও উল্লেখ করা হয়। তাই নাম না করলেও, বরুণ আসলে মোদিকেই নিশানা করেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এর আগে, গত মাসেই  উত্তরপ্রদেশে গিয়েও ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন বরুণ। সেবার তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'সাধুদের কোনও ভাবে না ঘাঁটানোই উচিত। কে জানে কবে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে বসবেন তিনি।' সভা চলাকালীন এক সাধুর ফোন বেজে ওঠাতে বিজেপি কর্মীরা শশব্যস্ত হয়ে উঠলে ওই মন্তব্য করেন বরুণ। সেবার যোগী আদিত্যনাথ তাঁর নিশানায় ছিলেন বলে দাবি ওঠে।


গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে কুনো ন্যাশনাল পার্কে ২০টি নতুন চিতার অন্তর্ভুক্তি হয়, জন্ম নেয় চারটি শাবক। কিন্তু তার মধ্যে ন'টি চিতা ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছে মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে। নিম্নমানের রেডিও কলারের ব্যবহার, অব্যবস্থাকেই এর জন্য দায়ী করেছেন পশু বিশেষজ্ঞেরা। যদিও সরকার তা মানতে নারাজ। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টেও উঠেছে ইতিমধ্যে। সেই আবহে ২০২৩-এর শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে গাঁধী সাগর অভয়ারণ্যে আরও চিতা আনার কথা ঘোষণা করেছেন চিতা প্রকল্পের প্রধান এসপি যাদব। সেই নিয়ে এবার মুখ খুললেন বরুণ।