কলকাতা: বছর ঘুরলেই বঙ্গ বিধানসভা হাইভোল্টেজ নির্বাচন। নীল বাড়ি দখল করার নীল নকশা তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। তারই প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে দু’দিনের কলকাতা সফরে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডা। আর নাড্ডার বঙ্গ সফরের সূচনা হল বিক্ষোভ আর বাগযুদ্ধ দিয়ে। একদিকে নাড্ডা যেমন ‘মমতার সরকারকে উপড়ে ফেলা’র হুঙ্কার দিয়েছেন, পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ওরা রাজ্যের নয়, বাইরের লোক, ভেদাভেদ করতে এসেছে।
বুধবার দুপুর ২টোয় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির গাড়ি এসে দাঁড়ায় হেস্টিংসের আগরওয়াল হাউসে বিজেপির পার্টি অফিসের সামনে। নাড্ডা গাড়ি থেকে নামতে না নামতেই সেখানে চলে আসে জনা পঞ্চাশেক বিক্ষোভকারী! হাতে কালো পতাকা। মুখে গো ব্যাক স্লোগান। সেই সময় ঘটনাস্থলে গুটি কয়েক পুলিশ কর্মী উপস্থিত ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের দিকে তেড়ে যান বিজেপি কর্মীরা। কারও হাতে বাঁশ, কারও হাতে চ্যালাকাঠ!! যুযুধান দু’পক্ষকে সামলাতে পুলিশের তখন হিমশিম অবস্থা। এই সময় বন্দর এলাকার বিজেপি নেতা রাকেশ সিংও আরও কিছু কর্মী-সমর্থককে নিয়ে সেখানে হাজির হন। পরিস্থিতি আরও তেতে ওঠে। তুমুল বচসা শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে। হাতাহাতি শুরু হওয়ার উপক্রম। কোনওমতে সংঘর্ষ এড়াতে সক্ষম হন পুলিশ কর্মীরা। কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে পারস্পরিক দোষারোপের পালা।
বিজেপির অভিযোগ, নাড্ডাকে ঘিরে পরিকল্পিত বিক্ষোভের পিছনে মদত আছে তৃণমূলের। পাল্টা বিক্ষোভকারীদের দাবি, দল নয়, কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধিতা করার জন্যই এখানে এসেছি। বাইরে তখন তুলকালাম চলছে, সেই পরিস্থিতিতেই হেস্টিংসে বিজেপির নতুন পার্টি অফিসের উদ্বোধন করেন নাড্ডা। ৪ তলা ঝাঁ চকচকে পার্টি অফিসে কনফারেন্স রুম থেকে কল সেন্টার, নেতাদের বসার জায়গা – সব কিছুই রয়েছে। সূত্রের খবর, মুরলীধর সেন লেন নয়, ’২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য বিজেপির কন্ট্রোল রুম হতে চলছে এই পার্টি অফিস। এখানেই বসেই ভোট প্রক্রিয়া পরিচালনা করবেন বঙ্গ বিজেপির কাণ্ডারিরা! এই অনুষ্ঠান থেকেই বিভিন্ন জেলার আরও ৯টি পার্টি অফিসের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন নাড্ডা। সেই মঞ্চ থেকেই ফের একবার বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। দলের রাজ্য নেতাদের মনে করিয়ে দেন একুশের ‘মিশন টু হান্ড্রেডের’ কথা! বলেন, বাংলায় বিজেপি লম্বা লড়াই করেছে। আজ থেকে ৯ বছর আগে ২০১১তে আমরা মাত্র ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম বাংলায়। সেখান থেকে ২০১৪-তে ২টো সিট পেয়েছি। ১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছি। ২০১৯-এ ১৮টি আসন পেয়েছি। ভোট শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪০। ২০২১-এর নির্বাচনে ২০০ সিট পার করব। সরকার গড়ব। মমতার সরকারকে উপড়ে ফেলব। তিনি আরও বলেন, জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি। বিজেপির শুরু বাংলা থেকেই। বাংলা বিবেকানন্দের ভূমি, রামকৃষ্ণের ভূমি। লস্ট গ্লোরি। পুনরুদ্ধার করতে হবে। যদিও নাড্ডার হুঙ্কারে আগামী নির্বাচনের ফলাফলে বিশেষ প্রভাব পড়বে না, পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
বাগযুদ্ধের আবহেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্রে ভবানীপুরে যান নাড্ডা। কিন্তু তিনি হেস্টিংসের পার্টি অফিস থেকে বেরোতে না বেরতেই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। আরেক দফায় বেশ কিছু বিক্ষোভকারী, ব্রিজ হয়ে হেস্টিংসের দিকে এগোতে যান। তাঁদের ব্রিজের ওপরেই আটকে দেয় পুলিশ। হেস্টিংসের বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যায় তখন বেড়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে দু’পক্ষের মাঝে দাঁড়িয়ে পড়ে পুলিশ।
Nadda in bengal: বিজেপির শুরু বাংলা থেকেই, ২১-এর ভোটে ২০০-র বেশি সিট নিয়ে মমতার সরকারকে উপড়ে ফেলব, হুঙ্কার নাড্ডার
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
09 Dec 2020 06:39 PM (IST)
হেস্টিংসে বিজেপির নতুন পার্টি অফিসের উদ্বোধন করেন নাড্ডা। ৪ তলা ঝাঁ চকচকে পার্টি অফিসে কনফারেন্স রুম থেকে কল সেন্টার, নেতাদের বসার জায়গা – সব কিছুই রয়েছে। সূত্রের খবর, মুরলীধর সেন লেন নয়, ’২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য বিজেপির কন্ট্রোল রুম হতে চলছে এই পার্টি অফিস। এখানেই বসেই ভোট প্রক্রিয়া পরিচালনা করবেন বঙ্গ বিজেপির কাণ্ডারিরা!
NEXT
PREV
খবর (news) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -