দার্জিলিঙ: কখনও পুলিশ কিয়স্কে আগুন। কখনও পর্যটনস্থলে আগুন। কখনও সরকারি অফিসে আগুন। কখনও আবার পুলিশের উপর হামলা। এভাবেই প্রায় দু’মাস ধরে জ্বলার পর পাহাড় নিয়ে যখন আলোচনার একটা ক্ষেত্র প্রস্তুত করার চেষ্টা চলছে, তখন পাহাড়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ!

পুলিশ প্রাথমিকভাবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতৃত্বকেই সন্দেহের তালিকায় রাখছে! তারা মনে করছে, বিস্ফোরণের জন্য গুরুং ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা দায়ী। সূত্রের খবর, পুলিশ মনে করছে এই বিস্ফোরণের নেপথ্যে ষড়যন্ত্র রয়েছে। রাজ্য পুলিশের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জানিয়েছেন, বিমল গুরুঙ্গ, প্রবীণ সুব্বা ও প্রকাশ গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা রুজু হয়েছে। পাশাপাশি, এই তিনজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারাও দেওয়া হয়েছে। বিস্ফোরক আইনের পাশাপাশি নাশকতার জন্য ইউএপিএ-র ৪টি ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই পাহাড়ে অশান্তির নেপথ্যে জঙ্গিযোগের অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দার্জিলিঙের এই বিস্ফোরণ যদি দিনের বেলায় হত, তাহলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারত। চকবাজার যেহেতু জনবহুল এলাকা, সেখানে প্রচুর বাড়ি ও দোকান রয়েছে, তাই ব্যাপক সংখ্যায় প্রাণহানি হতে পারত! কিন্তু বিস্ফোরণ হল মাঝরাতে। এলাকা যখন শুনশান।

পাহাড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করলেও, বিবৃতি জারি করে বিমল গুরুঙ্গ প্রশ্ন তুলেছেন, মাঝরাতে শহরের প্রাণকেন্দ্রে কীভাবে বিস্ফোরণ হল, সেটাই আমরা বুঝতে পারছি না! কারণ, বিস্ফোরণস্থল থেকে ২০০ মিটারের মধ্যেই দার্জিলিং সদর থানা। ১০০ মিটারের মধ্যে ডেপুটি পুলিশ সুপারের অফিস। তাই আমাদের দাবি, এনআইএ অফিসারদের রেখে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক।

মোর্চার দাবি, গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনকে বানচাল করতেই এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। বিরোধীরা অবশ্য পাহাড় ইস্যুতে তৃণমূল সরকারের সমালোচনায় সরব। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে এদিন সুর কিছুটা নরম করে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কার্যত আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে মোর্চা। যে রাতে চকবাজারে বিস্ফোরণ হল, তাৎপূর্যপূর্ণভাবে সেই রাতেই লেবংয়ে মোর্চার দলীয় অফিসে আগুন লাগানো হয়েছে। দুটি ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।