নয়াদিল্লি: কোভিশিল্ড টিকা নেওয়ার পর ভারতে গ্রাহকদেক রক্ত বেরনো এবং শিরা বা ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধার (থ্রম্বোম্বোলিক) অল্প কিছু ঘটনা ঘটেছে। সোমবার স্বীকার করল দ্য ন্যাশনাল কমিটি অন সিরিয়াস অ্যাডভার্স ইভেন্টস ফলোয়িং ইমিউনাইজেশন (এইএফআই)। তবে এই ঘটনা অতি সামান্য বলেই দাবি অ্যাডভার্স ইভেন্টস ফলোয়িং ইমিউনাইজেশনের।


সোমবার প্যানেলের তরফে জানানো হয়েছে,  ভারতে এখনও পর্যন্ত টিকা দেওয়ার পরে এই ধরনের ৭০০টি  ঘটনা সামনে এসেছে। তাদের মধ্যে ৬১৭ জনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার ফলে অত্যন্ত গুরুতর প্রভাব দেখা দিয়েছে, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে কয়েক জনের। সংখ্যাটা এ ক্ষেত্রে মাত্র ২৬ বলেই জানিয়েছে প্যানেল। 


প্যালেন আরও বলেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির কোভিশিল্ডের ডোজ গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, ১০ কোটি ডোজের মধ্যে ০.৬১-এর চেয়েও কম ডোজে সমস্য়া হয়েছে। পাশাপাশি এও স্পষ্ট করা হয়েছে, তবে এই ঘটনার সঙ্গে ভারত বায়োটেক তৈরি কোভ্যাক্সিন টিকার কোনও সম্পর্ক নেই। এই টিকার ক্ষেত্রে এখনও এমন কোনও ঘটনা সামনে আসেনি।' 


অ্যাডভার্স ইভেন্টস ফলোয়িং ইমিউনাইজেশন কমিটির এক আধিকারিক এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'এই তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, পশ্চিমি দেশগুলিতে গ্রাহকদের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তুলনামূলকভাবে দক্ষিণ এশীয় দেশগুলির বাসিন্দাদের মধ্যে টিকা নেওয়ার পরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা অনেকাংশেই কম।'


ওই আধিকারিক আরও বলেন, 'কোভিশিল্ডের ডোজ নেওয়ার পরে যাঁদের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে দেখা যাচ্ছে, সেগুলো সবই প্রথম সপ্তাহে। ব্রিটেনে টিকা নেওয়ার পরে বিপুল সংখ্যক এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তার থেকে ভারতে অনেক কম।


তবুও টিকা নেওয়ার পর রক্ত জমাট বাঁধার দিকে নজর রাখারও পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। পাশাপাশি বাসিন্দাদের টিকা নেওয়ার পরে মাথা ব্যথা, গায়ে ব্যথা, পেটে ব্যথা, বমি, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই সে দিকেও সবাইকে নজর রাখতে হবে বলেই পরামর্শ এইএফআই-এর। 


গবেষণার পর একটি ইওরোপীয়ান মেডিসিন এজেন্সি জানিয়েছে, 'এই টিকাটি সুরক্ষিত এবং ভাল প্রভাবও ফেলেছে। থ্রম্বোম্বোলিকের মাত্র কয়েকটি ঘটনা চূড়ান্ত ফলাফল নয়।' বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও কোভিশিল্ডকে সমর্থন করা হয়েছে এবং বলা হয়ছে একেবারেই না নেওয়া থেকে টিকা নেওয়া ভাল। 


অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা নিয়ে রক্ত জমাট বাঁধার মতো একাধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এমনকি, মৃত্যুও ঘটেছে বলে দাবি করে ইউরোপের কয়েকটি দেশে। ভারতে কোভিশিল্ডের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দেয় হু। জানিয়ে দেওয়া হয়, এখনই এ টিকার প্রয়োগ বন্ধে রাজি হয়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।  হু-র মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস এক সাংবাদিক সম্মেলনে  আশ্বাস দিয়ে বলেন, 'টিকা নেওয়ার পর যে সমস্ত মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে।'