মুম্বই: টিউশন পড়ানোর সময় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ। পকসো আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছিল শিক্ষককে। কিন্তু বম্বে হাইকোর্টে জামিন পেলে গেলেন ৬০ বছর বয়সি ওই শিক্ষক। আদালত জানিয়েছে, পরিবার ও পুলিশের শেখানো মিথ্যে বুলিই আওড়েছে ছোট্ট মেয়েটি। (POCSO Case)
বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি সারং ভি কোতওয়াল ওই ব্যক্তির জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। বিচারপতি জানান, হতে পারে শিখিয়ে দেওয়া কথাই বলেছে মেয়েটি। কারণ ট্রায়াল কোর্টের শুনানি চলাকালীন, মেয়েটি জানিয়েছিল, আদালতে কীভাবে প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়, তা মা ও পুলিশের এক কনস্টেবল তাকে শিখিয়েছিল। (Bombay High Court)
এই মামলাটি ২০১৭ সালের। অভিযোগ, সে বছর ৫ মার্চ মেয়েটিকে যৌন নিগ্রহ করা হয়। সে তখন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। নিজের দাদার সঙ্গে টিউটরের কাছে পড়তে গিয়েছিল। সেই সময় ওই শিক্ষক তাকে যৌন নিগ্রহ করে। ১৯ মার্চ সেই মর্মে থানায় অভিযোগ করেন মেয়েটির মা।
মেয়েটি জানায়, ওই শিক্ষক তাকে নিজের ঘরে ডাকেন। সেখানে একটি বই পড়তে বলা হয় তাকে। সেই সময় অশোভন আচরণ করেন ওই শিক্ষক। সরাসরি তার স্তন স্পর্শ করেন। মেয়েটি এতে ভয় পেয়ে যায়। পাশের ঘরেই ওই শিক্ষকের স্ত্রী অন্যদের পড়াচ্ছিলেন। মেয়েটি তাঁর কাছে চলে যায়।
কিন্তু এই ঘটনার পরও মেয়েটি পরদিন ওই শিক্ষকের কাছে পড়তে গেল কী করে, সব জেনেও মা যেতে দিলেন কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত। ওই শিক্ষকের আইনজীবী দাবি করেন, মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে তাঁর মক্কেলকে। নিয়মিত ক্লাসে না আসার জন্য বকা হয়েছিল মেয়েটিকে। তাতেই এত বড় অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, ওই শিক্ষকের আইনজীবী দাবি করেন, ঘটনার সময় অভিযুক্তের স্ত্রী বাড়িতেই ছিলেন। তাঁর উপস্থিতিতে এমন ঘটনা ঘটা অসম্ভব। মা-ই শিশুটিকে মিথ্যে বয়ান দিতে রাজি করিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এর আগে, ওই শিক্ষককে পকসো আইনের ১০ নং অনুচ্ছেদের আওতায় ওই শিক্ষকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড হয় তাঁর। ২০১৭ সালে অল্প সময়ের জন্য জেলে ছিলেন ওই শিক্ষক। ২০২৫ সালের ৯ জানুয়ারি ফের হেফাজতে নেওয়া হয় তাঁকে। এর পর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
ছোট্ট মেয়েটির আইনজীবীর দাবি, ১০ বছরের মেয়ে নিজের শিক্ষকের বিরুদ্ধে এত বড় মিথ্যে অভিযোগ সাজাতে পারে না। স্ত্রী থাকাকালীন অন্য একটি ঘরে মেয়েটিকে ওই শিক্ষক নিগ্রহ করেন বলেও যুক্তি দেন তিনি। কিন্তু বম্বে হাইকোর্ট জানায়, মেয়েটির বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। মাকে ঘটনার কথা জানিয়ে পরদিনও পড়তে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে, যা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তারিখও ঠিকঠাক বলতে পারেনি সে। ২৫ হাজার টাকার বন্ডে ওই শিক্ষকের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।